পূর্বসূরিদের জবান থেকে বহু বক্তব্য বর্ণিত হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা কীভাবে আল্লাহর সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন, তার খোঁজ পাওয়া যায়। সৃষ্টিজগতের গূঢ় রহস্য সম্পর্কে ভাবা এবং আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল হওয়াকে তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত মনে করতেন।

আল্লাহর কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয় আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আর্বতনে বহু নিদর্শন রয়েছে বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন লোকদের জন্য।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০)

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.

) তাঁর তাফসিরে ইবনে কাসির গ্রন্থে ‘চিন্তা-গবেষণা’ বিষয়ে বেশ কয়েকজন মনীষীর চিন্তাধারা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘চিন্তা-ভাবনা করে ধীর গতিতে দুই রাকাত নামাজ পড়া ভুলোমন নিয়ে রাতভর ইবাদতের চেয়ে উত্তম।’ বিখ্যাত তাবেয়ি, হাসান বসরি (রহ.) আমের ইবনে আবদে কায়স (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘আমি একজন-দুইজন-তিনজন নয়, অনেক সাহাবিদের বলতে শুনেছি, ঈমানের আলো, অথবা জ্যোতি হলো চিন্তা-গবেষণা।’ হাসান বসরি (রহ.) নিজে বলতেন, ‘কিছুক্ষণের চিন্তা-ভাবনা রাতভর নামাজের থেকে উত্তম।’

আরও পড়ুনআজান এল কেমন করে ১০ নভেম্বর ২০২৪

আবু সুলাইমান দারানি (রহ.) বলেন, ‘আমি ঘর থেকে বের হওয়ার পর যে জিনিসে দৃষ্টি পড়ে, দেখি আমার ওপর রয়েছে আল্লাহর নেয়ামত এবং আমার জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়।’

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ (রহ.) বলেন, ‘চিন্তা একটি আলো, যা মানুষের অন্তরে প্রবেশ করে।’

ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর স্মরণ-সম্পৃক্ত আলোচনা একটি ভালো কাজ বটে। তবে আল্লাহর নেয়ামত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উত্তম ইবাদত।’ তার সম্পর্কে আরও বর্ণিত আছে, ‘একবার সাথিবর্গের সামনে তিনি কাঁদছিলেন। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, পৃথিবী ও এর আস্বাদ ও কামনা নিয়ে ভাবলাম, তাতে এই শিক্ষা পেলাম যে, সমস্ত আস্বাদ ও কামনা শেষ হয়ে যাবে। একপর্যায়ে তা বিস্বাদে পরিণত হতো, তাতে যদি যে শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, তার জন্য শিক্ষা না থাকত। নিশ্চয় পৃথিবীতে রয়েছে উপদেশ গ্রহণকারীর জন্য উপদেশ।’

এ ছাড়া ইহইয়াউ উলুমিদ দীন (২/৪২৯) গ্রন্থে আছে, মুহাম্মদ ইবনে ওয়াসি (রহ.) বলেন, ‘বসরার এক ব্যক্তি আবু যর (রা.)-এর মৃত্যুর পর তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে আবু যর এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, তিনি সারা দিন ঘরের কোণে বসে চিন্তা-ভাবনা করতেন।

 সূত্র: মিন মায়িনিশ শামায়েল

অনুবাদ: মনযূরুল হক

আরও পড়ুনসাহাবিদের বিয়ের আয়োজন ছিল সাদামাটা২৩ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ