২০১৮ সালে সিলেটে বাংলাদেশ টেস্ট হেরেছিল ১৫১ রানে। সাত বছর পর আবার একই মঞ্চে ৩ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। ব‌্যাটিংয়ে হতশ্রী পারফরম‌্যান্স। বোলিংয়ে করতে পারল লড়াই। বারবার ব‌্যাকফুটে গিয়েও বাংলাদেশ আর পারেনি ম‌্যাচটা বাঁচাতে। জিম্বাবুয়ে ধ্রুপদী পারফরম‌্যান্সে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দুই ম‌্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব‌্যবধানে।

বাংলাদেশ ১১২ রানের লিড নিয়ে বুধবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল। দলের লক্ষ‌্য ছিল লিড অন্তত ৩০০ রানে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ৬১ রান করেই বাংলাদেশ আজ হারায় ৬ উইকেট। দিনের দ্বিতীয় বলে নাজমুল হোসেন শান্ত বাজে শট খেলে আউট হন। তার মতে, ওই শটটাই ম‌্যাচের ভাগ‌্য লিখে দেয়। ম‌্যাচ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডিও—

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই হারটা কতোটুকু হতাশার। কোথায় বাংলাদেশ হেরে গেল?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
অবশ‌্যই হতাশার। ওভারঅল পুরো ম‌্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম‌্যাচ হারা। অতিরিক্ত হতাশার এটা আসলে বলবো না। একটা আন্তর্জাতিক ম‌্যাচ ছিল। আপসেট। ভালো করিনি। এতোটুকুই।

আরো পড়ুন:

সাকিব, তাইজুলের পর মিরাজ

সিলেট, জিম্বাবুয়ে ‘ভূত’ ও ‘বিটিভি যুগের’ বাংলাদেশ

দিনের দ্বিতীয় বলে আপনার আউটা কী ম‌্যাচের ভাগ‌্য গড়ে দিয়েছে?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
আমার কাছে তাই মনে হয়। আমার আউটটা পুরো খেলাটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই ছন্দটা ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।

তারপরও শেষ দিকে বোলিংয়ে কিছুটা লড়াই হয়েছিল?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
ওখানে মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছেন। বোর্ডে এরকম রান থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছে সেটাকে ক্রেডিট দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় বোর্ডে পর্যাপ্ত রান ছিল না।

জিম্বাবুয়ে শেষ দশ ম‌্যাচে জেতেনি। র‌্যাংকিংয়ে জিম্বাবুয়ে পিছিয়ে। ওদের বিপক্ষে এই হারটা কি অন‌্য হারের কষ্ট থেকে বেশি?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
বেশি বলবো না। যে কোনো ম‌্যাচ হারলেই খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা আমাদের সামর্থ‌্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। আমরা বিশ্বাস করি আমরা এর থেকেও ভালো খেলার মতো দল। এজন‌্য হতাশ। অনেক বেশি হতাশ এই ম‌্যাচটা হেরে বিষয়টা এরকম না। নরম‌্যালি ম‌্যাচ হারলে যেরকম খারাপ লাগে আজকে তেমনই লাগছে।

সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হলো। স্বাগতিক সুবিধা আমরা নেইনি। সামনে চট্টগ্রামে ম্যাচ। চট্টগ্রামেও কী এই ধরণের উইকেটে খেলবেন নাকি পুরো স্বাগতিক সুবিধা নেবে বাংলাদেশ?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
আমার মনে এরকম স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত। উইকেট খুবই ভালো ছিল। ব‌্যাটসম‌্যানদের জন্য যেরকম সুবিধা ছিল। বোলারদের জন‌্যও টুকটাক সুবিধা ছিল। এখান থেকে আসলে পেছনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। সামনের ম্যাচে এ ধরনের উইকেট থাকা উচিত। সামনের ম্যাচে এ ধরনের স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত।

আপনার আউটটা নিয়েই যদি আবার জিজ্ঞেস করি। তখন উইকেটে গিয়ে এভাবে শট খেলার প্রয়োজন কেন হলো? সময় নেওয়া যেত না নাকি?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
আমার নরম‌্যালি রানের জন‌্য চিন্তা থাকে। স্কোরিং অপোরচুনিটির চিন্তা থাকে। যেটা আউট হয়েছে আমার কাছে মনে হয়েছে আমি সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। যেটা আপনি বললেন দিনের দ্বিতীয় বল ছিল। আমারও মনে হয় আরেকটু সময় নিলে বেটার হতো। এই শটটা আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও সত‌্য। পাশাপাশি দলের যে পরিস্থিতি ছিল আমি টাইম নিলেও পারতাম।

বাকি ব্যাটসম‌্যানদের কোথায় সমস‌্যা হচ্ছে?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
ব‌্যাটিং দেখেন আমরা খুবই সফট ডিসমিসাল সবগুলোতে। আমার মনে হয় না আমরা খুব ভালো বলে উইকেট দিয়ে এসেছি। স্কিলের থেকে মেন্টালি অনেক ব‌্যর্থতা থাকতে পারে। সবাই তার নিজের আউট নিয়ে বলতে পারবে। ব‌্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্ববোধ বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে যারা সেট হয়ে আউট হচ্ছে।

এখান থেকে আসলে ঘুরে দাঁড়ানো কিভাবে সম্ভব?
নাজমুল হোসেন শান্ত:
পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে অবশ‌্যই অনুপ্রাণিত হতে হবে। আবার শুধু অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু হয় না। যে জায়গায় ভুলে করেছি সেগুলো শুধরে নিতে হয়। ভুল যেন না হয় সেগুলোতে কাজ করতে হয়। আজকের ম‌্যাচ পুরো আমি একা হারিয়েছি। সকালে ওই আউটটাতে আমাদের পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি আজ ৫০-৬০ রানের জুটি হতো তাহলে ২২০ কিংবা তার বেশি রান হলে কিন্তু আমরা ভালো অবস্থানে থাকতাম। এই ম‌্যাচে আমি আসলে সবার দিকে যেতে চাই না। পুরো দায়ভারটা আমি নিতে চাই। খুব ভালো সময়ে আউট হয়েছি।

সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সময় ন র আউট উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি। কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অধিক আলোচনায় থাকেন। কারণ নিজের ইচ্ছায় বাঁচেন এই নায়িকা। ফলে তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন উড়লেও তা গায়ে মাখেন না।  

ব্যক্তিগত জীবনে একাধিকবার বিয়ে করেছেন পরীমণি। সর্বশেষ অভিনেতা শরীফুল রাজের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। এ সংসারে পূণ্য নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। যদিও এ সংসারও টিকেনি। প্রেম, বিয়েবিচ্ছেদ, সন্তান নিয়ে মাছরাঙা টেলিভিশনের ‘বিহাইন্ড দ্য ফেইম উইথ আরআরকে’ অনুষ্ঠানে খোলামেলা কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।  

আরো পড়ুন:

ঈদে মুক্তি পাবে পরীমণির সিনেমা

শুধু বেঁচে থাকার চেয়ে, বাঁচা জীবন উদযাপন করাই শ্রেয়: পরীমণি

এ আলাপচারিতায় সঞ্চালক জানতে চান, তোমার কি মনে হয় বিয়েটা ভুল ছিল? জবাবে পরীমণি বলেন, “না। আমার জীবনের কোনো কিছুই ভুল না। সবকিছুই একটা অভিজ্ঞতা।” সঞ্চালক বলেন, আমার মনে হয়, তোমার সাথে এখন পূণ্য থাকার কারণে বিয়েটাকে ভুল বলছো না। জবাবে পরীমণি বলেন, “না, না। ও না থাকলেও বলতাম। অন্য একজনকে নিয়ে কেন বলি না। সবচেয়ে বেশি আফসোস কী জানেন, আমার সাথে কোনো এক্সের (প্রাক্তন) ওই মুহূর্ত আসে নাই, যেখানে গালাগালির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।” 

খানিকটা ব্যাখ্যা করে পরীমণি বলেন, “যে গালিটা চরিত্রের উপরে যাবে, হৃদয়ে লাগবে। মানে আত্মসম্মানে লাগবে এমন কিছু গালি থাকে না! সেটা হতে পারে তুই অথবা কোনো গালিই না! এরকম কোনো পর্যায় আমার এক্সের সাথে হয় নাই। যখন আমার মনে হয়েছে, ওই পক্ষটা আর আগাবে না, টাফ ছিল…।” 

এরপর সঞ্চালক জানতে চান, তুমি কী সংসারটা ধরে রাখতে চেয়েছিলে? জবাবে পরীমণি বলেন, “এটা পরে বলি। আমরা দুইপক্ষ যখন বসলাম যে, এটা আর আগানো যাবে না, একটা রেসপেক্টফুল জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা ব্রেকআপ করি। কেন? হয়তো কোথাও দেখা হবে! হয়তো দেখা হবে না। কিন্তু কোথাও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে নামটা আসলে, সেখান থেকে উঠে চলে যাব ব্যাপারটা এরকম যেন  না হয়, ব্যাপারটা যাতে সহনশীল একটা জায়গায় থাকে। এই সম্মানটা আমি সবার কাছ থেকে পেয়েছি, সবাইকে দিয়েছিও। যে প্রাক্তনের (প্রাক্তন স্বামী) কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অপমানিত হয়েছি। এসব তো আপনাদের সামনেই হয়েছে। বিচ্ছেদটা তো আরো সুন্দর হতে পারত, সেটা কেন হয়নি?” 

আমরা শুনেছি, এখন তিনি বাচ্চার (পূণ্য) খোঁজখবর নেন, ভরণপোষণ দেন—সঞ্চালকের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে পরীমণি বলেন, “আমি তো কোথাও শুনিনি। উনি মনে হয় ভুলে গেছেন, উনার বাচ্চা আছে। আমি নিশ্চিত, উনি ভুলে গেছেন।” কেউ কেউ বলেন, তুমি নাকি যোগাযোগ করতে দাও না? এ প্রশ্নের জবাবে পরীমণি বলেন, “বাচ্চা বড় হয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এসব অভিযোগের কোনটা সে গ্রহণ করবে, কোনটা করবে না। আমি প্রত্যেকটি বিষয় ক্লিয়ার করে রেখে গিয়েছি, আম পাবলিক একটা কথা বলল সেটাও। আমি যদি আজকে মরেও যাই, এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে, তার সবকিছুই ও পেয়ে যাবে। আমি এভাবে এটা রেখে গিয়েছি। এখন আমার কাজই এটা। মাদারহুডে আমি কোনোভাবেই ফেল করতে চাই না, আমি করবও না। আমার বাচ্চা কোনো দিন আমার দিকে আঙুল তুলে কথা বলতে পারবে না। এমন না যে, ও ওর বাবাকে অসম্মান করে কথা বলবে। কারণ আমি ওকে ওইভাবে বড় করছি।”

বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে পরীমণি বলেন, “হাসপাতালে উনার নাম্বার দেওয়া। আমি আসলে উনার নামটাও মুখে নিতে চাই না। যাহোক, পূণ্যর টিকার ডেটে হাসাপাতাল থেকে মেসেজে উনার ফোন নাম্বারে যায়, উনি কি এটা দেখেন না? আমি কোনো অভিযোগ করছি না, যারা বলেন আমি যোগাযোগ করতে দিই না, তাদের জন্য বলছি—‘এসব তথ্য ভুল’। উনি না হয় ভুলে যান, কিন্তু আমার বাচ্চার দাদা-দাদি নাই? রক্ত তো মুছে ফেলা যায় না। পূণ্যর বিশেষ দিনগুলোতে তারা কেন একটা ফোন দেন না? পূণ্য যখন অসুস্থ হয়, তখনো কেন ফোন করেন না, খোঁজখবর নেন না? খোঁজখবর নেওয়া মানে তো ভরণপোষণ দেওয়া না, আমার বাচ্চার ভরণপোষণ লাগে না। তারাও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন?”    

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির