আমার আউটটাতে আমাদের পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে: নাজমুল
Published: 23rd, April 2025 GMT
২০১৮ সালে সিলেটে বাংলাদেশ টেস্ট হেরেছিল ১৫১ রানে। সাত বছর পর আবার একই মঞ্চে ৩ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে হতশ্রী পারফরম্যান্স। বোলিংয়ে করতে পারল লড়াই। বারবার ব্যাকফুটে গিয়েও বাংলাদেশ আর পারেনি ম্যাচটা বাঁচাতে। জিম্বাবুয়ে ধ্রুপদী পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে।
বাংলাদেশ ১১২ রানের লিড নিয়ে বুধবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল। দলের লক্ষ্য ছিল লিড অন্তত ৩০০ রানে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ৬১ রান করেই বাংলাদেশ আজ হারায় ৬ উইকেট। দিনের দ্বিতীয় বলে নাজমুল হোসেন শান্ত বাজে শট খেলে আউট হন। তার মতে, ওই শটটাই ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেয়। ম্যাচ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডিও—
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই হারটা কতোটুকু হতাশার। কোথায় বাংলাদেশ হেরে গেল?
নাজমুল হোসেন শান্ত: অবশ্যই হতাশার। ওভারঅল পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম্যাচ হারা। অতিরিক্ত হতাশার এটা আসলে বলবো না। একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। আপসেট। ভালো করিনি। এতোটুকুই।
আরো পড়ুন:
সাকিব, তাইজুলের পর মিরাজ
সিলেট, জিম্বাবুয়ে ‘ভূত’ ও ‘বিটিভি যুগের’ বাংলাদেশ
দিনের দ্বিতীয় বলে আপনার আউটা কী ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে?
নাজমুল হোসেন শান্ত: আমার কাছে তাই মনে হয়। আমার আউটটা পুরো খেলাটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই ছন্দটা ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।
তারপরও শেষ দিকে বোলিংয়ে কিছুটা লড়াই হয়েছিল?
নাজমুল হোসেন শান্ত: ওখানে মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছেন। বোর্ডে এরকম রান থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছে সেটাকে ক্রেডিট দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় বোর্ডে পর্যাপ্ত রান ছিল না।
জিম্বাবুয়ে শেষ দশ ম্যাচে জেতেনি। র্যাংকিংয়ে জিম্বাবুয়ে পিছিয়ে। ওদের বিপক্ষে এই হারটা কি অন্য হারের কষ্ট থেকে বেশি?
নাজমুল হোসেন শান্ত: বেশি বলবো না। যে কোনো ম্যাচ হারলেই খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। আমরা বিশ্বাস করি আমরা এর থেকেও ভালো খেলার মতো দল। এজন্য হতাশ। অনেক বেশি হতাশ এই ম্যাচটা হেরে বিষয়টা এরকম না। নরম্যালি ম্যাচ হারলে যেরকম খারাপ লাগে আজকে তেমনই লাগছে।
সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হলো। স্বাগতিক সুবিধা আমরা নেইনি। সামনে চট্টগ্রামে ম্যাচ। চট্টগ্রামেও কী এই ধরণের উইকেটে খেলবেন নাকি পুরো স্বাগতিক সুবিধা নেবে বাংলাদেশ?
নাজমুল হোসেন শান্ত: আমার মনে এরকম স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত। উইকেট খুবই ভালো ছিল। ব্যাটসম্যানদের জন্য যেরকম সুবিধা ছিল। বোলারদের জন্যও টুকটাক সুবিধা ছিল। এখান থেকে আসলে পেছনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। সামনের ম্যাচে এ ধরনের উইকেট থাকা উচিত। সামনের ম্যাচে এ ধরনের স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত।
আপনার আউটটা নিয়েই যদি আবার জিজ্ঞেস করি। তখন উইকেটে গিয়ে এভাবে শট খেলার প্রয়োজন কেন হলো? সময় নেওয়া যেত না নাকি?
নাজমুল হোসেন শান্ত: আমার নরম্যালি রানের জন্য চিন্তা থাকে। স্কোরিং অপোরচুনিটির চিন্তা থাকে। যেটা আউট হয়েছে আমার কাছে মনে হয়েছে আমি সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। যেটা আপনি বললেন দিনের দ্বিতীয় বল ছিল। আমারও মনে হয় আরেকটু সময় নিলে বেটার হতো। এই শটটা আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও সত্য। পাশাপাশি দলের যে পরিস্থিতি ছিল আমি টাইম নিলেও পারতাম।
বাকি ব্যাটসম্যানদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে?
নাজমুল হোসেন শান্ত: ব্যাটিং দেখেন আমরা খুবই সফট ডিসমিসাল সবগুলোতে। আমার মনে হয় না আমরা খুব ভালো বলে উইকেট দিয়ে এসেছি। স্কিলের থেকে মেন্টালি অনেক ব্যর্থতা থাকতে পারে। সবাই তার নিজের আউট নিয়ে বলতে পারবে। ব্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্ববোধ বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে যারা সেট হয়ে আউট হচ্ছে।
এখান থেকে আসলে ঘুরে দাঁড়ানো কিভাবে সম্ভব?
নাজমুল হোসেন শান্ত: পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হতে হবে। আবার শুধু অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু হয় না। যে জায়গায় ভুলে করেছি সেগুলো শুধরে নিতে হয়। ভুল যেন না হয় সেগুলোতে কাজ করতে হয়। আজকের ম্যাচ পুরো আমি একা হারিয়েছি। সকালে ওই আউটটাতে আমাদের পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি আজ ৫০-৬০ রানের জুটি হতো তাহলে ২২০ কিংবা তার বেশি রান হলে কিন্তু আমরা ভালো অবস্থানে থাকতাম। এই ম্যাচে আমি আসলে সবার দিকে যেতে চাই না। পুরো দায়ভারটা আমি নিতে চাই। খুব ভালো সময়ে আউট হয়েছি।
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সময় ন র আউট উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
এরকম ঘটনা আমি জীবনেও দেখিনি: ইসরায়েলি বাসিন্দা
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলি শহরের একটি এলাকা এখন ধ্বংসস্তূপ। শনিবার দিবাগত রাতে চালানো ইরানের হামলায় ইসরায়েলের বাত ইয়াম শহরের আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আবাসিক ব্লক ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সেখানে শিশুসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় দুইশত মানুষ এবং নিখোঁজ রয়েছেন চারজন।
দেশটির উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, বাত ইয়ামে ৮ বছর বয়সী এক মেয়ে, ১০ বছর বয়সী এক ছেলে এবং ১৮ বছরের তরুণসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের
আইডিএফ জানিয়েছে, চারজন নিখোঁজ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভোরে একগুচ্ছ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলের স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাত ইয়াম শহর। মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এখানকার একটি আবাসিক ব্লক। বড় বড় দালান ভেঙে এখন সেখানে দেখা যাচ্ছে সব ইটের টুকরো। এক জায়গায় পড়ে আছে বাচ্চাদের খেলনা।
রিবাত ভাকনিন নামের বাসিন্দা জানান, তার বাবা নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি সময়মতো আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি।
তিনি বলেন, আমার ভাই বাবাকে নিতে ঘরের ভেতরে ঢুকেছিল। তারপরই হঠাৎ বিস্ফোরণ হলো। বড় একটা ধাক্কায় আমার ভাই ছিটকে পড়লো। কিন্তু আমার বাবাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
৫০ বছর বয়সী নারী গিমেল বলেন, তিনি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জয়া নামের পোষা কুকুরকে খুঁজছেন।
‘আমি বাড়িতে একা ছিলাম। সাইরেনের শব্দ শুনে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা ভাবলাম। কিন্তু আমি প্রথমে দৌড়ে বাথরুমে গেলাম। তখনই আমি দুইটি বোমার শব্দ শুনতে পেলাম। আমার কাছে মনে হলো সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। বাইরে বেরিয়ে জানতে পারলাম চারজন নারী নিহত হয়েছেন। আর তখনই আমার মাথার ওপর পুরো সিলিং ভেঙে পড়ল’, বলেন ওয়াইনেটকে।
তিনি বলেন, আমার মনে হলো- আমি মারা যাচ্ছি।
‘যখন বুঝতে পারলাম আমি জীবিত তখন আমার বাবা-মার কথা চিন্তা করলাম। তারাও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি। মনে হলো-আমরা সবাই জীবন্ত কবরের মধ্যে আছি’, বলেন ওয়াইনেটকে।
বারুচ বলেন, ‘আমি আমার জীবনেও এমন ঘটনা দেখিনি।’
‘আমি যুদ্ধে ছিলাম। ছয় দিনের যুদ্ধের সময় আমি গোলান হাইটসে ছিলাম। তখন বিমানগুলো আমার ওপর দিয়ে উড়ে গিয়েছিল। আমি তখনকার বিমানের ক্ষমতা দেখেছি। কিন্তু এখনকার মতো পরিস্থিতি আমি কখনও দেখিনি। আমি বোমার ক্ষমতায় পুরোপুরি ভীত’, বলেন তিনি।