ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর ফলে জেলেনস্কির কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শান্তি আলোচনাকে ক্ষতি করার জন্য ট্রাম্প জেলেনস্কিকে অভিযুক্তও করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প তার মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে দাবি করেছেন, “যুদ্ধের অবসানের  জন্য একটি চুক্তি ‘খুব কাছাকাছি’ ছিল, কিন্তু জেলেনস্কির মার্কিন শর্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যা সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করা ছাড়া আর কিছুই করবে না।”

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনে শ্রমিকবাহী বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৯

ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত পুতিন

ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, তারা ক্রিমিয়া ছেড়ে দেবে না। রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া ভূখণ্ড দখল করে নিজেদের সাথে সংযুক্ত করেছিল।

কিছুদিন আগে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স শান্তিচুক্তি প্রসঙ্গে মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেছিলেন, “এই চুক্তির অর্থ হবে ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়কেই বর্তমানে তাদের মালিকানাধীন কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে।” 

তবে হোয়াইট হাউজ প্রশাসন এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো ভৌগোলিক ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি।

যুক্তরাষ্ট্র ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে কিনা, বুধবার (২৩ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি কেবল যুদ্ধের অবসান দেখতে চাই। আমার কোনো পছন্দের লোক নেই। আমি কোনো পছন্দের লোক চাই না। আমি একটি চুক্তি সম্পন্ন করতে চাই।”

বিবিসি লিখেছে, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার অবৈধ দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া জেলেনস্কির পক্ষে কেবল রাজনৈতিকভাবেই যে অসম্ভব হবে তা নয়, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনি নিয়মেরও পরিপন্থি হবে। 

তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এ ধরনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছেন যে, যে তার দেশ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উপর তার দাবি ছেড়ে দেবে।

মঙ্গলবার জেলেনস্কি তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে জানান, ইউক্রেন রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে স্বীকৃতি দেবে না। 

তিনি বলেন, “এখানে কথা বলার কিছু নেই। এটি আমাদের সংবিধানের পরিপন্থি।”

জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের এই পাল্টাপাল্টি মন্তব্য তাদের সর্ম্পকে অবনতির সর্বশেষ ঘটনা। এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে প্রথম বৈঠকেই তাদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) হোয়াইট হাউজের ট্রাম্প ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করা তার কাছে সহজ বলে মনে হয়েছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি মনে করি রাশিয়া চুক্তির জন্য প্রস্তুত।” ট্রাম্প বলেন, “তিনি বিশ্বাস করেন যে, ওয়াশিংটন ক্রেমলিনের সাথে একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে কিন্তু কিয়েভের সঙ্গে নয়।”

ট্রাম্প বলেন, “আমি ভেবেছিলাম জেলেনস্কির সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ হতে পারে। এখন পর্যন্ত, এটি আরো কঠিন।”

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় সময় ট্রাম্প বারবার বলেছিলেন যে, তিনি একদিনের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন। কিন্তু মার্কিন হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের তিন মাস পরেও ট্রাম্পের কাছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতি অধরা রয়ে গেছে। 

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট হতাশ। তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।”

গত বুধবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেন যদি দ্রুত কোনো চুক্তিতে না পৌঁছায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়াবে। গত সপ্তাহে ট্রাম্প এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একই হুমকি দিয়েছিলেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইউক র ন ট র ম প বল ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

তরমুজ তুলতে মাঠে নারী শ্রমিক

২ / ৯পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও তরমুজের মাঠে কাজ করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ