কাশ্মীরে হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ চাইলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Published: 24th, April 2025 GMT
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতশাসিত কাশ্মীরে হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ চেয়েছেন। ভারতের দাবির পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ‘যে কোনো হামলায় সবসময় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তারা বার বার দোষারোপের খেলা খেলে। এবারও তাই করছে তারা। কাশ্মীরে হামলায় পাকিস্তান যদি জড়িত থাকে, তবে ভারত এর প্রমাণ বিশ্বের কাছে প্রকাশ করুক।’
এদিকে কাশ্মীরে হামলায় জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘ভারতের আত্মায় আঘাত করে তারা ভুল করেছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এই হামলার পরিকল্পনা করেছে, হামলায় অংশ নিয়েছে, তাদেরকে এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যা তারা চিন্তাও করতে পারবে না।
গত মঙ্গলবার ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর জেরে গতকাল বুধবার সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার একগুচ্ছ পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তান।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ভারতের ইস্যু করা সব ভিসা বাতিল করা হলো। এছাড়াও যেসব পাকিস্তানি ভারতে অবস্থান করছেন তাদের দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে হামলার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সর্ব ভারতীয় বৈঠকের আহ্বান করেছেন নরেন্দ্র মোদি। পরে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে কোনো সময় সামরিক যুদ্ধের দিকে যেতে পারে দুই দেশ।
গত মঙ্গলবার বিকেলে পেহেলগাম শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বৈসরণ উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর ওই হামলা হয়। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এ উপত্যকাকে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ভারত বলছে, গতকালের এ ঘটনা ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিতে সম্ভাব্য সবকিছু করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার।
পর্যটকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরান, ইতালিসহ অনেক দেশ। হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পাকিস্তান প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা প্রধান উপদেষ্টার
পর্যটকদের ওপর হামলায় নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস