হজে ঘুরেফিরে একই মুখ নাম উঠাতেও তদবির
Published: 24th, April 2025 GMT
সরকারি খরচে এ বছর হজে যাচ্ছেন ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা বৈদেশিক মুদ্রায় ভ্রমণভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এতে একজনের জন্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে ৩০০ জনের পেছনে খরচ দাঁড়াবে প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
সরকারি খরচে ঘুরেফিরে একই ব্যক্তি বারবার হজে যাচ্ছেন। অনেকের বিরুদ্ধে তদবির করার অভিযোগও রয়েছে। তালিকার অনেক ব্যক্তির হজ সম্পর্কে জ্ঞান নেই। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কয়েক কর্মকর্তা জানান, ধর্ম উপদেষ্টা ও সচিব নতুন হওয়ায় হজ শাখার কর্মকর্তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী তালিকা করেছেন। এতে ধর্ম উপদেষ্টার দপ্তরের চার গাড়িচালক ও এক সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর রয়েছেন। ধর্ম সচিবের দপ্তরের অফিস সহায়ক ও সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর জায়গা করে নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন পর্যন্ত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পিও আব্দুস সালাম ও আব্দুল জাব্বার, এও রাসেল মামুদ ও কম্পিউটার অপারেটর আশরাফুল ইসলাম ৯ বার করে হজে গেছেন। এ বছরও তালিকায় আছেন। একইভাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত ব্যক্তিগত সহকারী জহিরুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক আনোয়ার আটবার, পিও মাজহারুল ইসলাম ছয় এবং এও মোহাম্মদ আজিজুল হক পাঁচবার হজে গেছেন। সৌদি আরবের হজ অফিসে পদায়নে থেকেও তারা হজ করেছেন। পিও রুকনুজ্জামান সিরাজী তিনবার, পিও জাফর ইকবাল চারবার, চাকরির তিন বছরে ইমন মিয়া তিনবার, দুই বছরের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ও তৌফিক গেছেন দু’বার করে হজে গেছেন। সবাই এবারও তালিকাভুক্ত হয়েছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী তিন থেকে চার বছর ধরে নিয়মিত হজে যাচ্ছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হজের প্রশাসনিক দলে রয়েছেন অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিবসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ৫৮ কর্মকর্তা। হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দলে রয়েছেন ৫০ পিওন-গাড়িচালকসহ নিম্ন পদের কর্মচারী। ২০ সদস্যের কারিগরি দলে আছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার অপারেটররা। ধর্ম উপদেষ্টার নেতৃত্বে হজ মনিটরিং টিমে আছেন সাত কর্মকর্তা। সমন্বিত হজ চিকিৎসা দলে আছেন ১৬৫ জন। এর মধ্যে ৮০ চিকিৎসক, ৪৪ নার্স, ২৫ ফার্মাসিস্ট ও ১৬ ওটি/ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট। এসব কর্মকর্তার মধ্যে প্রথম ব্যাচে যাবেন ১৭০; দ্বিতীয় ব্যাচে ১৩০ জন। প্রথম ব্যাচের ৭০ জন আজ শুক্রবার এবং আগামীকাল শনিবার যাবেন ৯০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিমানের বিজনেস ক্লাসের যাত্রী।
তালিকা নিয়ে লুকোচুরি
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাজি সেবার নামে সরকারি টাকায় সৌদি আরব যাওয়া ব্যক্তির নামে প্রজ্ঞাপন হতো। এবার এখনও প্রজ্ঞাপন হয়নি। তবে যারা হজে যাচ্ছেন, তাদের মোবাইলে এসএসএস পাঠানো হয়েছে। যদিও কখন কার ফ্লাইট, তারা এখনও জানতে পারেননি।
ধর্ম উপদেষ্টা ড.
সৌদি সরকার ২০২৩ সাল থেকে হাজি সেবা দলের সদস্যদের হজে নিষেধাজ্ঞা দিলেও, বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করে বাংলাদেশ সদস্যদের হজ করিয়েছেন। ধর্ম উপদেষ্টা বললেন, এবারও শেষ মুহূর্তে অনুমতি পাওয়া গেলে হজ দলের সদস্যরা হজ করবেন।
হজসেবায় ৪০০ প্রবাসী
হাজিদের সহায়তাকারী হিসেবে আরবি ভাষায় পারদর্শী ও স্থানীয় রাস্তাঘাট ভালো চেনেন– সৌদি আরবে বসবাসকারী এমন অন্তত ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও প্রবাসী নিয়োগ হয়েছেন। এর পরও স্বাস্থ্যকর্মী বাদেই ১৩৫ জন হজে যাচ্ছেন।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম মিজানুর রহমান বলেন, হজযাত্রীদের সেবার জন্য যাদের প্রয়োজন, শুধু তাদের নেওয়া যেতে পারে। এর বাইরে সরকারি খরচে কাউকে নেওয়া ঠিক হবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হজ কর মকর ত র ব র কর সদস য ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//