কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার প্রতিক্রিয়ায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সাবেক কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি নয়াদিল্লি একতরফাভাবে স্থগিত বা বাতিল করতে পারে না।

ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনার এক দিন পর গত বুধবার ভারত এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার আবদুল বাসিত বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত বা বাতিল করা যাবে না । এ নিয়ে আতঙ্ক না ছড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

বাসিত আরও বলেন, ‘ভারত এখনই পাকিস্তানের পানি বন্ধ করতে পারবে না।’ তবে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত কিছু প্রতিকূল পদক্ষেপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

সাবেক এই পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন, ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত রয়েছে। অধিকন্তু ওয়াগা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করা পাকিস্তানের জন্য খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

আবদুল বাসিত বলেন, ‘ভারত যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে, এ জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

আবদুল বাসিতের সঙ্গে একমত পোষণ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পিপিপি সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত বা বাতিল করা যায় না।

শেরি রহমান স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সফরের সময় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে একটি হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দোষারোপ করেছিল। তবে তদন্তে প্রমাণিত হয়, সে অভিযোগ ছিল মিথ্যা।

সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেরি রহমান বলেন, এ হামলায় সব ইঙ্গিতই ‘ছদ্মবেশী অভিযান’-এর দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
একই মত প্রকাশ করে সাবেক সিনেটর মিশাহিদ হুসেইন সৈয়দ বলেন, পেহেলগাম ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে তুলে ধরে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের চেষ্টা করছে, যেন পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়।

মিশাহিদ বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি দ্বিপক্ষীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি। মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার যদি পাকিস্তানের পানি বন্ধ করে, তবে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।

সাবেক এই সিনেটর জাতিসংঘ মহাসচিবকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের মিথ্যা অভিযোগের ব্যাপারে জানানোর আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্বস্তরের মানুষ ভারতকে উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত আছি।’

সিন্ধু এশিয়া মহাদেশের অন্যতম দীর্ঘ নদী। এটি এ অঞ্চলের অত্যন্ত সংবেদনশীল সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর ভেতর রয়েছে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মীরের বিভাজনরেখা।

১৯৬০ সালে অনুষ্ঠিত সিন্ধু পানি চুক্তি দুই দেশের মধ্যে তত্ত্বগতভাবে পানিবণ্টন ঠিক করে থাকে। তবে বরাবরই এ চুক্তি ছিল বিরোধপূর্ণ।

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কা করে আসছে, ভারতের অবস্থান উজানে বিধায় দেশটি পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে, যা পাকিস্তানের কৃষি খাতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: একতরফ ভ ব পদক ষ প ন ব ত ল কর ক টন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধুদের নিয়ে ‘উড়াল’

আট বছর আগে জোবায়দুর রহমানকে গল্পটা শুনিয়েছিলেন সম্রাট প্রামানিক। জোবায়দুর তখন সহকারী পরিচালক, স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়া। কয়েক বছর পর সত্যি সত্যিই যখন সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবলেন, শুরুতেই তাঁর সেই গল্পের কথা মনে পড়ল। সম্রাটকে ফোন করলেন জোবায়দুর, চায়ের দোকানে বসে আবারও গল্পটা শুনলেন। ঠিক করলেন, এ গল্প থেকেই ছবি বানাবেন তিনি।

পেশাদার কোনো প্রযোজকের কাছে যাননি জোবায়দুর, নিজেরাই স্বাধীনভাবে ছবিটি নির্মাণ করেছেন; পাশে ছিলেন ভাই-বন্ধুরা। নির্মাতা বললেন, ‘এটাই আমার প্রথম নির্মাণ, আগে কোনো কাজ করিনি। কী করা যায়? আশপাশের ভাই–বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। শরীফ সিরাজ, সম্রাট প্রামানিক, জহিরুল ইসলামসহ তিন-চারজন মিলে কাজটা শুরু করি।’ তাঁরা কেন বিনিয়োগ করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা জোবায়দুর বলেন, ‘গল্পের কারণে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।’

শুটিংয়র ফাঁকে তোলা ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ