নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতি নদীতে বর্তমানে নেই কোন স্রোত, তবুও থেমে নেই কয়েকটি গ্রামের নদী ভাঙন। কোন কোন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বালির বস্তাগুলো নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। ফলে আগের বস্তা সরে গিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙন।
এমন দৃশ্য দেখা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের কাশিপুর, মাকড়াইল,রামচন্দ্রপুর ও নওখোলা গ্রামে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি একের পর এক নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ৩টি স্কুল, কয়েকটি মসজিদ, আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং গ্রামীণ সড়ক।
মধুমতির ভাঙন প্রতিরোধের দাবিতে নদীতীরে লোহাগড়াবাসীর মানববন্ধন
বর্ষা মৌসুমে মধুমতি নদীতে ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোন জায়গায় বালির বস্তা ফেলে বাঁধ নির্মাণ করায় ভাঙন কিছুটা রোধ হয়েছিল। তবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ইজারাকৃত ও ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলনের কারণে বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়েছে। সেই কারণেই এ বছর বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে।
শালনগর ইউপির কাশিপুর গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, “মধুমতি নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণেই এ এলাকার ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। কোথাও গিয়ে নতুন করে বাড়িঘর করার মতো জমি তাদের নেই। তবে এবার বর্ষা মৌসুম এলে সব কিছু চলে যাবে মধুমতি নদী গর্ভে।”
মাকড়াইল গ্রামের ফজল মৃধা বলেন, “মধুমতি নদীতে আমাদের কয়েক একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আমার ভাই ইতোমধ্যে বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে গেছে। নদী থেকে বালি তোলার কারণে মাকড়াইল গ্রামের বেশ কিছু বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে পড়েছে।”
লোহাগড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রিয়াদ বলেন, “মধুমতি নদী ভাঙনের কারণে শালনগর ইউনিয়নের চারটি এলাকার বালি মহলের ইজারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নড়াইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, “নিয়ম না মেনে বালি উত্তোলনের কারণে আমাদের নির্মিত প্রতিরক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রশাসনের সহযোগিতায় ইজারাকৃত ও অনিয়মিত বালি উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণে কাজ করবে।”
ঢাকা/শরিফুল/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ লনগর ল হ গড়
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল