তিন মাসে গ্রামীণফোনের মুনাফা ৬৩৪ কোটি টাকা
Published: 25th, April 2025 GMT
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি গ্রামীণফোনের কর–পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩৪ কোটি টাকা। যদিও গত বছরের একই সময়ে তাদের মুনাফা হয়েছিল ১ হাজার ৩৪০ কোট টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে প্রায় ৫৩ শতাংশ।
আজ শুক্রবার গ্রামীণফোনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয়, মুনাফাসহ অন্যান্য বিষয় জানায়। এতে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলত সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির প্রভাব কোম্পানির আয়ে পড়েছে। তা ছাড়া ইন্টারনেটের দাম কমে যাওয়ার প্রভাবও রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও কোম্পানি আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, চলতি ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) গ্রামীণফোন ৩ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা আয় করেছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আড়াই শতাংশ কম। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের আয় ছিল ৩ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। তখন আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।
গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয়ও কমেছে ৫ দশমিক ২২ টাকা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪ দশমিক ৬৯ টাকা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আয় ছিল ৯ দশমিক ৯১ টাকা।
গ্রামীণফোন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪৮ লাখ। তাদের মোট গ্রাহকের ৫৭ শতাংশ; অর্থাৎ ৪ কোটি ৮৩ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট–সেবা ব্যবহার করেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পরিবেশের মধ্যেও কৌশলগত উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের আর্থিক কর্মক্ষমতা উন্নত হচ্ছে। এই প্রান্তিকেও ইন্টারনেটের গ্রাহকসংখ্যা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে ইন্টারনেটের মূল্য ১৭ শতাংশ হ্রাসের প্রভাবে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব কমেছে।’ তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও নেটওয়ার্ক অবকাঠামো রূপান্তরের মধ্য দিয়ে আমরা উদ্ভাবনের এক নতুন যুগে প্রবেশ করছি, যা দেশে একটি ডেটা ও ডিজিটালকেন্দ্রিক অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করছে।
গ্রামীণফোনের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) অটো মাগনে রিসব্যাক বলেন, ‘অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের যে ইঙ্গিত গত প্রান্তিকে পেয়েছিলাম, তা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। ফলে ডেটা ব্যবহারে প্রবৃদ্ধি ও গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি উভয় ক্ষেত্রে ইতিবাচক ধারা ফিরে এসেছে। পরপর দুই প্রান্তিকে গ্রাহক প্রতি গড় আয় (এআরপিইউ) হ্রাসের পর চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় চলতি বছর মোট রাজস্ব আড়াই শতাংশ কমেছে। মূলত ব্যয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অতিরিক্ত সতর্কতার ফলে এমনটি ঘটেছে। তবে অধিবর্ষের (লিপ ইয়ার) প্রভাব বাদ দিলে আগের বছরের পারফরম্যান্স বিবেচনায় মাত্র ১ শতাংশ পিছিয়ে আছি আমরা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র প রথম প র ন ত ক বছর র প র গত বছর র গ র হক দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।