কুমিল্লায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া, আতঙ্ক
Published: 25th, April 2025 GMT
কুমিল্লা নগীর তিন এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নগরীর রানীর দিঘির পাড়, তালপুকুরপাড় ও আদালতপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মহড়া দিতে দেখা যায়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কান্দিরপাড় এলাকা পার হয়ে রানীর দিঘির দক্ষিণপাড়ে শতাধিক কিশোর দেশীয় অস্ত্র হাতে ছোটাছুটি করেছে। অন্তত ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল বিকট আওয়াজ তুলে এসময় সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় আসা পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
দেবিদ্বার থেকে মেয়েকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে নিয়ে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘কিশোরদের অস্ত্র হাতে মহড়া দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’
নগরীর তালপুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিকেলে এক থেকে দেড়শ জন কিশোর ছেনি, রামদা ও চাপাতি হাতে এলাকায় আসে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আদালতপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাং তাদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মহড়া দেয়। এ সময় সড়কে চলাচলরত যানবাহনের চালকরা ভয়ে সড়কের পাশে অবস্থান নেয়।
জানা যায়, কুমিল্লা নগরীতে ডজন খানেক কিশোর গ্যাং আধিপত্য বজায় রাখতে প্রায়ই এভাবে শক্তির মহড়া দেয়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে জানান, কিশোর গ্যাংয়ের মহড়ার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন
ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ।
মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়।