নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী-শান্তির বাজার সড়কটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন কিলোমিটারের মতো। এই সড়ক ব্যবহার করতে হয় সোনারগাঁ ও পাশের আড়াইহাজার উপজেলার ২৫-৩০টি গ্রামের মানুষকে। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কের এখানে-ওখানে তৈরি হয়েছে গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্ত তলিয়ে যায়। বুঝতে না পারলে কখনও উল্টে পড়ে যানবাহন, কখনও হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খান পথচারীরা। বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক সংস্কারের কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।
গত বুধবার সকালের বৃষ্টিতে এই সড়কের অনেক জায়গাই তলিয়ে গিয়েছিল। এদিন কথা হয় গোয়ালপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রতিদিন এ রাস্তা ব্যবহার করেন। আমিনুল বলেন, একে তো রাস্তাটি দিয়ে চলাচলে বেগ পেতে হয়, এর মধ্যে বৃষ্টি হলে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রাস্তায় পানি জমে থাকায় কোথায় গর্ত, কোথায় ভালো তা বোঝা যায় না। যে কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহন উল্টে পড়ে। তার পরও ভোগান্তি নিয়ে হাজারো মানুষকে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে বারদী তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। এখানেই অবস্থিত সাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম। পাশাপাশি একই এলাকায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পৈতৃক ভিটা। যে কারণে নিয়মিত বিপুল পরিমাণ পর্যটক আসা-যাওয়া করেন। সাম্প্রতিক সময়ে আশপাশের এলাকার ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে মেঘনা নদীর ছটাকিয়া ঘাট। এসব এলাকায় আসার সময় সবাইকে ব্যবহার করতে হয় বারদী-শান্তির বাজার সড়কটি। এ ছাড়া পাশের আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা, উচিতপুরা, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া, কাকাইলমোড়া, নয়নাবাদ, বাহেরচর, চম্পকনগর, তেতৈতলা, লালুরকান্দি, তাতুয়াকান্দা, নয়াপাড়া, খাগকান্দা, মধ্যরচর, চৌদ্দ মৌজার লোকজনও এখান দিয়েই নারায়ণগঞ্জসহ অন্য জায়গায় যাতায়াত করেন। আশপাশের এলাকার মধ্যে শান্তির বাজারের পরিচিতি ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে। যে কারণে প্রতিদিন পণ্যবাহী বহু ট্রাক, পিকআপভ্যানও আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া যাত্রী নিয়ে চলাচল করে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারসহ নানা ধরনের যানবাহন। মসলেন্দপুরের বাসিন্দা মোস্তফা মিয়ার ভাষ্য, সোনারগাঁ উপজেলা সড়কে যেতে এ অঞ্চলের মানুষের বিকল্প পথ নেই। তা ছাড়া ঢাকার কাছে হওয়ায় অনেকেই বাড়ি থেকে অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। এই সড়কে তাদের প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
দুই উপজেলার ২৫-৩০টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির তথ্য দিয়ে বারদীর গোয়ালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক দেওয়ান সামছুর রহমান বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে থাকে। তখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে সড়কটি। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষকদের যাতায়াতে খুবই কষ্ট হয়। বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও রোগীদের জন্য রাস্তাটি আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই সড়ক সংস্কারের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বারদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল। তাঁর আশা, দ্রুত সময়ের মধ্যেই রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু হবে। তখন জনদুর্ভোগ কমবে।
এলজিইডি সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল র স ন রগ ই সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও নারায়ণগঞ্জ জেলার মুখ্য সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল আমিন।
একই সঙ্গে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের নিয়ে আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বুধবার (১২ জুন) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীকে নিয়ে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা, হুমকি ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডসহ সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে এ মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী ও জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী আহমেদুর রহমান তনুসহ স্থানীয় অন্যান্য নেতারা।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা নারায়ণগঞ্জে এখনও সক্রিয় আছে এবং তারা বিভিন্নভাবে অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে জেলার ব্যবসায়ী মহল ও রাজনৈতিকভাবে তাদেরকে পুনর্বাসনেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই ফ্যাসিস্টদের কঠোরভাবে দমন করতে হলে জরুরি ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযান প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি।
সেই লক্ষে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আমরা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানিয়েছি। এছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মামলাগুলো যথাযথভাবে পরিচালনাসহ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতেও জেলা পুলিশ সুপারকে বলেছি। এসপি সাহেব এসব বিষয়ে আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন।
এনসিপি নেতা আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, জেলা পুলিশ সুপার যদিও আমাদের দাবির বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন, তবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ না নিলে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধারা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, এনসিপির নেতারা সমসাময়িক কিছু বিষয়ে জানাতে এসেছিলেন। তাদের কথা শুনেছি। সে বিষয়ে পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে।