Samakal:
2025-06-15@20:41:43 GMT

১৫ বছর দুদকের ‘নিষ্ফল’ তদন্ত

Published: 26th, April 2025 GMT

১৫ বছর দুদকের ‘নিষ্ফল’ তদন্ত

চট্টগ্রামে দেড় যুগ আগে কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রকৌশলীদের সরেজমিন পরিমাপে মেলে অনিয়মের প্রমাণ। কাজ কম করে বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে সেই সময় চারটি মামলা করে দুদক। কিন্তু একই কাজের পরিমাপ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা কোনো অনিয়ম খুঁজে পাননি বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন গত বছর। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সম্প্রতি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে দুদক। এতে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

মামলার ১৩ বছর পর হঠাৎ এক আসামির আবেদনে দুদক সাড়া দেওয়ার পরই ফের পরিমাপ হলো এবং কোনো অনিয়ম না হওয়ার সার্টিফিকেট মিলল। ‘বিতর্কিত’ কাজকে সঠিক বলে সার্টিফিকেট দেন এলজিইডির প্রকৌশলীরা। 
এর আগে প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে দুদকের পাঁচ থেকে আট কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন। এজাহারে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে মামলা করা হলেও তদন্ত শেষে প্রমাণ না মেলার কথা বলে সম্প্রতি চার মামলার ১৯ আসামিকে দুর্নীতির দায় থেকে অব্যাহতি দিতে সুপারিশ করেছেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা। 

২০০৬-০৭ অর্থবছরের প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে সওজ না এলজিইডি– কোনো সংস্থার পরিমাপ প্রতিবেদন সঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সওজ প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরপরই পরিমাণ করে অনিয়ম ও কাজে গরমিলের প্রমাণ পায়। যে পরিমাণ কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো, তার অনেক বেশি অর্থ তুলে নিয়ে আত্মসাতের চিত্র তুলে ধরা হয়। দীর্ঘদিন পার হওয়ার পর এলজিইডির প্রকৌশলীরা তাদের প্রতিবেদনে কালভার্টগুলোর নিচে পানি থাকায় বেজমেন্টসহ অন্যান্য দিক পরিমাপ করতে না পারার কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করলেও প্রকল্পের প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ সঠিক পাওয়া গেছে বলে  প্রতিবেদন দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যে পরিমাণ কাজ হয়েছে, তার চেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এতেই প্রশ্ন উঠেছে কাদের প্রতিবেদন সঠিক। এ নিয়ে বিস্মিত বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা।  

প্রবীণ প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এক কাজে দুই সংস্থার প্রকৌশলীর মত একই হওয়ার কথা। মনে হচ্ছে, আসামিদের কোনো একটি সূত্র ধরে অব্যাহতি দিতে হবে, তাই এমন প্রতিবেদন হয়েছে।
নগরীর অক্সিজেন জংশন থেকে কাপ্তাই রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়কের ২০ লটের ক্রস কালভার্ট নির্মাণ শেষে ৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেন ঠিকাদার মেসার্স মদিনা ট্রেডিং। ২০০৬-০৭ অর্থ বছরের এই কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০০৮ সালে সওজের দুই প্রকৌশলী কালভার্ট পরিমাপ করে কাজের তুলনায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করার প্রমাণ পান। এ ঘটনায় দুদক বাদী হয়ে সিডিএর তিন প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০২৩ সালে আসামি সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস মামলার কিছু অসংগতি তুলে ধরে ভিন্ন কোনো প্রকৌশল বিভাগ দিয়ে কালভার্টটি পুনরায় পরিমাপ করার আবেদন করেন। তাঁর আবেদন গ্রহনণ করার পর এলজিইডির চার প্রকৌশলী দিয়ে নতুন করে পরিমাপ করানো হয়। পুনঃপ্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘২০০৬ সালে নির্মাণ করা কালভার্টটির ওপর দিয়ে বর্তমানে গাড়ি নিরাপদে চলাচল করছে। প্রকৌশল গাইডলাইন অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে বলে বর্তমান কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়। পরিমাপ গ্রহণের সময় কালভার্টের নিচে পানি থাকায় ওই অংশ যথাযথভাবে পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি। সবকিছু দেখে এখানে অনিয়ম দেখা যায়নি।’ 
তদন্ত কর্মকর্তা এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মামলার আসামি ঠিকাদার হাজি মোহাম্মদ ইসমাইল, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, ইকবাল হোসেন মজুমদার ও মো.

ইলিয়াছকে অব্যাহতি দিতে সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

এ ছাড়া এলজিইডির প্রকৌশলীদের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অন্য তিনটি মামলার মধ্যে সিডিএর একই প্রকল্পের একটি ক্রস কালভার্ট নির্মাণে সওজের প্রতিবেদনে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯০৪ টাকা আত্মসাতের দায় থেকে ঠিকাদার ইসহাক চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, ইকবাল হোসেন মজুমদার, মো. ইলিয়াছ ও জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ৫২ হাজার ৫৪১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা আরেকটি মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দিতে সুপারিশ করা হয়। ৪ লাখ ৯ হাজার ৪০৬ টাকা আত্মসাতের অন্য একটি মামলা থেকেও ঠিকাদার শামসুল আলম এবং প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসসহ আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করেছে দুদক। 

এ প্রসঙ্গে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তিন-চারটি দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সুপারিশ আমি যোগদানের আগেই করা হয়েছিল। কমিশন তা অনুমোদন করায় আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।’
অন্য একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. ফজলুল বারী বলেন, এলজিইডির প্রকৌশলীদের পরিমাপ প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রমাণ না পাওয়ায় মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র তদন ত কর কর মকর ত র পর ম প স ড এর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু

তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। 

রোববার তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞ‌প্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
+ ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও  +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ