জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন হত্যার ঘটনায় পাকিস্তান ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিক্রিয়া হিসেবে এক দেশ অপর দেশের ওপর কূটনৈতিক নানা পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। অনেকের শঙ্কা, পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ দুই দেশ জড়িয়ে পড়তে পারে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেও। এমন অবস্থায় উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইরান। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী। আমরা এমন সম্পর্ক উপভোগ করছি যা কয়েক শতক পুরনো সাংস্কৃতিক সভ্যতায় নীহিত। অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো তাদেরও আমরা সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করি। ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে থাকা আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা এই কঠিন সময়ে দুই দেশের মধ্যে বৃহৎ বোঝাপোড়া তৈরি করতে চাই।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়া পোস্টে পার্সিয়ান কবি সাদির একটি কবিতাও উল্লেখ করেছেন। এ কবিতায় সাদি লিখেছেন, মানুষ একটি একক পরিবার, যদি পরিবারের কেউ ব্যথিত হয়, অন্য সদস্যদের অস্বস্তিও রয়ে যাবে।

গত মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলা হয়। পাকিস্তান এতে পরোক্ষভাবে জড়িত আছে এমন অভিযোগ তুলে দেশটির সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি বাতিল, পাকিস্তানিদের সব ধরনের ভিসা সুবিধা বাতিল ও একইসঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা দেয় নয়াদিল্লি। এর জবাবে পাকিস্তানও প্রায় একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ভারতের বিমান নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভারতীয়দের ভিসা সুবিধা বাতিল করে দিয়েছে।

আজ ভারতের পানিশক্তিমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও যেন পাকিস্তানে না যায় সে ব্যবস্থা করছেন তারা। অপরদিকে গতকাল পাকস্তান জানায়, ভারত যদি পানির প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা করে তাহলে এটি যুদ্ধের কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে তারা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ