হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যাল ব্যবহার করে মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট হ্যাকের চেষ্টা
Published: 26th, April 2025 GMT
হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালের মতো এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে মাইক্রোসফট ৩৬৫ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের চেষ্টা করছে হ্যাকারদের একটি সংগঠিত চক্র। এই সাইবার তৎপরতার পেছনে রাশিয়াভিত্তিক হ্যাকারদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক ওয়েবসাইট ব্লিপিং কম্পিউটার।
ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মকর্তার ছদ্মবেশে হ্যাকাররা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এতে মেসেজিং অ্যাপের পাশাপাশি কখনো কখনো ইউক্রেন সরকারের একটি হ্যাকড হওয়া ই–মেইল ঠিকানাও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতারণামূলক বার্তাগুলোয় বলা হয়, ইউক্রেন–সংক্রান্ত একটি বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট লিংকে প্রবেশ করতে হবে। ভুক্তভোগীরা লিংকে ক্লিক করলে সেখানে মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় অথরাইজেশন কোড বা একবার ব্যবহারযোগ্য লগইন তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ভোলেক্সিটি গত মার্চ থেকে এই হ্যাকিং চেষ্টা পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হ্যাকাররা মূলত মানবাধিকার সংস্থা ও ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের টার্গেট করছে।
ভোলেক্সিটির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হ্যাকারদের পাঠানো বার্তাগুলোর ধরন প্রায় একই রকম। এগুলোয় ইউক্রেনভিত্তিক আলোচনার কথা বলে নির্দিষ্ট একটি ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করতে বলা হয়, যা আদতে ফিশিং সাইট। এসব সাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর মাইক্রোসফট ৩৬৫ অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়।
ভোলেক্সিটি তাদের ব্লগে বার্তাগুলোর স্ক্রিনশটসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল বা ই–মেইলে আসা অপরিচিত বার্তা পেলে তা খতিয়ে না দেখে লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাঁদের মতে, দিন দিন এসব হ্যাকিংয়ের কৌশল আরও নিখুঁত ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। সন্দেহজনক বার্তা পেলে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আইটি টিম বা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের জানানো উচিত। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে ‘টু–ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ চালু রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।
সূত্র: ম্যাশেবল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র ইউক র ন প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস