হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালের মতো এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে মাইক্রোসফট ৩৬৫ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের চেষ্টা করছে হ্যাকারদের একটি সংগঠিত চক্র। এই সাইবার তৎপরতার পেছনে রাশিয়াভিত্তিক হ্যাকারদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক ওয়েবসাইট ব্লিপিং কম্পিউটার।

ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মকর্তার ছদ্মবেশে হ্যাকাররা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এতে মেসেজিং অ্যাপের পাশাপাশি কখনো কখনো ইউক্রেন সরকারের একটি হ্যাকড হওয়া ই–মেইল ঠিকানাও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতারণামূলক বার্তাগুলোয় বলা হয়, ইউক্রেন–সংক্রান্ত একটি বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট লিংকে প্রবেশ করতে হবে। ভুক্তভোগীরা লিংকে ক্লিক করলে সেখানে মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় অথরাইজেশন কোড বা একবার ব্যবহারযোগ্য লগইন তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ভোলেক্সিটি গত মার্চ থেকে এই হ্যাকিং চেষ্টা পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হ্যাকাররা মূলত মানবাধিকার সংস্থা ও ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের টার্গেট করছে।

ভোলেক্সিটির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হ্যাকারদের পাঠানো বার্তাগুলোর ধরন প্রায় একই রকম। এগুলোয় ইউক্রেনভিত্তিক আলোচনার কথা বলে নির্দিষ্ট একটি ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করতে বলা হয়, যা আদতে ফিশিং সাইট। এসব সাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর মাইক্রোসফট ৩৬৫ অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়।

ভোলেক্সিটি তাদের ব্লগে বার্তাগুলোর স্ক্রিনশটসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল বা ই–মেইলে আসা অপরিচিত বার্তা পেলে তা খতিয়ে না দেখে লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাঁদের মতে, দিন দিন এসব হ্যাকিংয়ের কৌশল আরও নিখুঁত ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। সন্দেহজনক বার্তা পেলে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আইটি টিম বা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের জানানো উচিত। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে ‘টু–ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ চালু রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।

সূত্র: ম্যাশেবল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র ইউক র ন প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ