সেবা পেতে চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন দাবি
Published: 26th, April 2025 GMT
বিচারপ্রার্থী মানুষের সহজে বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা। আজ শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন চট্টগ্রামবাসী।
চট্টগ্রাম হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের আয়োজনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট এএসএম বদরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন প্রধান সমন্বয়ক চট্টগ্রাম আইন কলেজর উপাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট বদরুল হুদা মামুন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাশেম কামাল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী সদস্যসচিব সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, কাশেম চৌধুরী, মোহাম্মদ বদরুল রিয়াজ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করা। এ দাবির প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে বাস্তবায়নের সূচনা করেছেন বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। সম্প্রতি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে আলোচনা করায় বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রায় ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশে বিচারিক সেবা প্রদান করেন মাত্র ২০০০ বিচারক। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান তথা ৭২-এর সংবিধানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনুচ্ছেদ- ১০০ সংযোজন পূর্বক জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির বিধান রাখা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। চট্টগ্রামে দ্রুত সার্কিট ব্যঞ্চ স্থাপন করতে প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার নিকট দাবি করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে সামরিক ফরমানের ৪-এ ধারা বলে চট্টগ্রামসহ রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, সংবিধান পূনরুজ্জীবিত হলে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে। এ অজুহাতে সংবিধানে স্থায়ী বেঞ্চের বিধান বিলুপ্ত করা হয়। জেনারেল এরশাদ ১৯৮৬ সালে সামরিক ফরমানের ৪-এ ধারা সংশোধন করে স্থায়ী ৬টি বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চে রূপান্তরিত করেন। এরপর ঢাকার আইনজীবীদের আন্দোলনের ফলে সার্কিট বেঞ্চ ফের বিলুপ্ত করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবুল কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুলকে (৫৯) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। পরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইয়ুব বাবুল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মহল্লা বাড়ির মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে পটিয়া পৌরসদর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ আগস্ট দুপুরে পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুমের (পটিয়া মাদরাসা) ছাত্র মো. নুরুল হাসান ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আইয়ুব বাবুল এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়াও বিএনপি অফিসে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট, বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টাসহ আরও তিনটি মামলার তিনি এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ সমকালকে বলেন, ‘পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুল হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আইয়ুব বাবুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আইয়ুব বাবুল নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৩৬টি। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৪ ভোট।