রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বেশ কয়েকটি খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠন করেনি। এই কমিশন গঠন জরুরি।

গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বাংলাদেশ ২.০ জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: সশস্ত্র বাহিনী সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজক নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস (এনডিজে)।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান বলেন, ৫ আগস্টের পর আট মাস পেরিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনীর সংস্কারের জন্য কোনো কমিশন গঠন করেনি।

বিগত আমলে সামরিক বাহিনীকে নানাভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক এম শাহীদুজ্জামান। তিনি সশস্ত্র বাহিনী সংস্কারের বিষয়ে জোর দেন।

বেসরকারি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রব বলেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠন করতে হবে। এটি হলে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক দলের স্বার্থে কাজ করবেন না।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিসের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) হাসান নাসির। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ ও চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র করেছে। পরিকল্পিতভাবে ২০০৯ সালে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে পিলখানায় হত্যা করেছে। পাঁচ শতাধিক সেনা কর্মকর্তা ও সহস্রাধিক সৈনিককে চরম অন্যায়-অবিচারের মাধ্যমে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সামরিক বাহিনীর অতীতের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

সেমিনারে দেশের তরুণ সমাজ ও সীমান্তের জনগণকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। বলা হয়, ১৮ বছরের যুবকদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিলে তাঁদের মাঝে দেশপ্রেম বৃদ্ধি পাবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ