নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি র‍্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ আগে কারাগারে আয়েশেই দিন কাটাতেন। বাসা থেকে রান্না করা খাবার যেত চাকরিচ্যুত এই লেফটেন্যান্ট কর্নেলের জন্য। সাধারণ কারাবন্দীদের জন্য বরাদ্দ খাবার তিনি খেতেন না।

তবে গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চিত্র পাল্টে গেছে। তারেক সাঈদ এখন কুমিল্লার কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে আছেন। তাঁর জন্য ‘আলাদা’ ব্যবস্থা নেই। সাধারণ কারাবন্দীদের খাবার খেতে দেওয়া হয় তাঁকে।

আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ২৭ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় অপহরণের শিকার হন আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক মো.

ইব্রাহিম। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম। 

আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ২৭ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়।

এ ঘটনায় হওয়া দুই মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত ব্যক্তিরা। হাইকোর্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল এবং অপর ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামির দণ্ড বহাল থাকে। আসামিপক্ষ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। এখনো তা নিষ্পত্তি হয়নি।

তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম। কনডেমড সেলে যেমন আছেন তারেক সাঈদ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারের যে বিশেষ সেলে রাখা হয়, সেটি কনডেমড সেল বা নির্জন প্রকোষ্ঠ। কারাগারের অন্য বন্দীদের তুলনায় কনডেমড সেলের বন্দীদের জন্য রয়েছে ভিন্ন আচরণবিধি। অন্য বন্দীদের থাকার জায়গার সঙ্গেও কনডেমড সেলের পার্থক্যও আছে অনেকটা। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের তেমন একটি কনডেমড সেলে আছেন তারেক সাঈদ।

জানতে চাইলে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবদুল্ল্যাহেল আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তারেক সাঈদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলছে। মাঝেমধ্যে কারা–চিকিৎসক কনডেমড সেলে এসে তারেক সাঈদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। পরিবারের সদস্যরা মাসের নির্দিষ্ট দিনে কারাগারে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। তবে তাঁর জন্য তাঁদের পরিবারের আনা কোনো খাবার গ্রহণ করা হয় না।

সাধারণ বন্দীদের যে খাবার দেওয়া হয়, কনডেমড সেলে তারেক সাঈদকে সেই খাবার দেওয়া হয় বলে জানান কারা কর্মকর্তা আল-আমিন। খাবারের তালিকা প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকালে রুটি ও ভাজি দেওয়া হয়। দুপুরে খেতে দেওয়া হয় ভাত, ডাল ও সবজি। আর রাতে দেওয়া হয় ভাত, ডাল, সবজি ও মাছ।

হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিদের মধ্যে তারেক সাঈদ ছাড়া রয়েছেন সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (চাকরিচ্যুত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম এম রানা এবং সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেন।

কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে, এম এম রানা আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২–এ। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২–এর জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক আল–মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে তাঁকে একটি সেলে রাখা হয়েছে।

আর আরিফ আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার–৪–এ। সেখানে তাঁকে একটি কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে বলে কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র ত র ক স ঈদ বন দ দ র ল ইসল ম অন য ব র জন য নজর ল

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

ওই তরুণের নাম রাহীম (২৩)। তিনি বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বারপাড়া এলাকায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।

এর আগে গতকাল গভীর রাতে দক্ষিণ বারপাড়া এলাকায় ডাকাতির চেষ্টাকালে রাহীমকে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, গতকাল রাত প্রায় ২টার দিকে দক্ষিণ বারপাড়া এলাকায় এক বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাসিন্দারা টের পেয়ে ধাওয়া দিয়ে রাহীমকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এ সময় পালিয়ে যাওয়া ডাকাতদের হামলায় এক নারী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ওসি আরও জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে আছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • আগারগাঁওয়ে সেনা অভিযানে অপহৃত ৪ কিশোর উদ্ধার
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
  • অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র ও গুলিসহ অপহরণকারী আটক
  • ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার