ঢাকায় বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন নয়
Published: 27th, April 2025 GMT
রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে বায়ুদূষণ রোধে কেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এই আদেশ দেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো.
ওই চিঠি অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পরে মনির উদ্দিন হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। রিটে বলা হয়, গত নয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বায়ুমানের রেকর্ড হয়েছে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায়। ওইদিন শহরের গড় বায়ুমান সূচক (AQI) ছিল ২৮৮, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পড়ে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, বায়ুমান সূচক ০-৫০ থাকলে বাতাস বিশুদ্ধ ধরা হয়, ৫১-১০০ হলে তা সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য, ১০১-১৫০ হলে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং ২০১-৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সূচক ৩০১ বা তার বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎস হলো—ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া এবং নির্মাণসাইটের ধুলাবালি। রিটে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, সারা বিশ্বের ১২৪টি দূষিত শহরের মধ্যে ঢাকাকে দূষণের দিক থেকে প্রথম অবস্থানে দেখা যায়। ওইদিন ঢাকার গড় বায়ুমান সূচক ছিল ২৫০।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের কবলে থাকা ঢাকার পরিস্থিতি দিন দিন আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। পরিবেশগত দিক বিবেচনায় বায়ুদূষণ রোধে দ্রুত কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা পরিত্যক্ত নগরীতে পরিণত হতে পারে–এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রিটে বলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র যকর ব যবস থ গ রহণ র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।