কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ, পাস ৪৯.৭১ শতাংশ, শিক্ষার্থীরা পাবেন সোমবার
Published: 27th, April 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি ইউনিটের মধ্যে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হওয়া ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এই ইউনিটে পাসের হার পাসের ৪৯ দশমিক ৭১। আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল–সংক্রান্ত তথ্য জানান। পরীক্ষার্থীরা নিজেদের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল দেখতে পাবেন আগামীকাল সোমবার।
এর আগে গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন মোট ২৩ হাজার ৭৯৩ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১৬ হাজার ৭৫৮ জন পরীক্ষা দিয়েছেন। শতাংশ হিসাবে উপস্থিতির হার ৭০ দশমিক ৪৩। ‘বি’ ইউনিটে মোট ৪৪০টি আসন রয়েছে।
আরও পড়ুননেদারল্যান্ডসে স্কলারশিপ, আইইএলটিএস ৬.৫ বা টোয়েফলে ৯০ থাকলে আবেদন৮ ঘণ্টা আগে
গুচ্ছপদ্ধতি থেকে বের হয়ে চার বছর পর নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ এবং ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২২ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘এ’ এবং ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশিত হয়েছে। আগামীকাল (২৮ এপ্রিল) সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট লিংকে ক্লিক করে ভর্তি–ইচ্ছুকেরা স্ব–স্ব প্যানেলে প্রবেশ করে তাঁদের ফল দেখতে পারবেন। ‘বি’ ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ২৩ হাজার ৭৯৩ জন। পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ১৬ হাজার ৭৫৮ জন এবং উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ হাজার ৩৩২ জন। এর মধ্যে কলা ও মানবিকে ৬ হাজার ৮৫৬ জন, বিজ্ঞানে ১ হাজার ৫২ জন এবং ব্যবসাশিক্ষায় ৪২৪ জন। জিপিএ ছাড়া সর্বোচ্চ নম্বর কলা ও মানবিকে ৮৬ দশমিক ২৫, বিজ্ঞানে ৭০ দশমিক ২৫ এবং বিজনেস স্টাডিজে ৭২ দশমিক ৫০ পয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। পাসের হার ৪৯ দশমিক ৭১। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে দেখা যাবে।
আরও পড়ুনকুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা: তিন কক্ষে ভুল প্রশ্নপত্র, পরীক্ষার আহ্বায়ককে অব্যাহতি১৯ এপ্রিল ২০২৫এ বছর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর ওপর ৩০ নম্বর কমিয়ে ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা ১০০ নম্বরের এবং বাকি ২০ নম্বর থাকবে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ওপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৩০টি আসনের বিপরীতে এবার ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’—তিনটি ইউনিটে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৬৬ হাজার ৪০২টি। সে হিসাবে এবার প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৪। ‘এ’ ইউনিটে ৩২ হাজার ৬৫৭ জন আবেদনকারীর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন ২১ হাজার ৯৯৪ জন শিক্ষার্থী। শতাংশ হিসেবে যা উপস্থিতির হার ৬৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এই ইউনিটে মোট আসন রয়েছে ৩৫০টি। ‘এ’ ইউনিটে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ হাজার ৪৮৯ জন, পাসের হার ৩৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ নম্বর ছিল ৭৭।
আর ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৯ হাজার ৯৫২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৭ হাজার ৬৪৬ জন পরীক্ষা দিয়েছেন, যা শতাংশ হিসাবে উপস্থিতির হার ৭৬ দশমিক ৮৩। ‘সি’ ইউনিটে মোট ২৪০টি আসন রয়েছে। ‘সি’ ইউনিটে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৫ হাজার ৩৩৩ জন। পাসের হার ৬৯ দশমিক ৭৫ এবং সর্বোচ্চ নম্বর ৮৮।
আরও পড়ুনপিএইচডি ফেলোশিপ দিচ্ছে সরকার, গবেষকেরা মাসে পাবেন ২৫০০০২৬ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ পর ক ষ য় র ফল ফল উপস থ ত আসন র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে বোধকরি একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা সম্ভব। তাঁরা যেভাবে গভীর কিংবা শেষ রাতে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ফেসবুকে বার্তা দিচ্ছেন; তাতে তো মনে হচ্ছে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা দিনে কাজ না করে রাতেই মনে হয় বেশি কাজ করেন! কয়েকটা উদাহরণ বরং দেওয়া যাক।
মাস কয়েক আগে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভাবে খারাপ হয়ে গেল, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাত তিনটার সময় সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন! বাংলাদেশের ইতিহাসে রাত তিনটার সময় আর কোনো মন্ত্রী এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করেছেন কি না, আমার অন্তত জানা নেই। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি হয়তো বড় কোনো ঘোষণা দেবেন। এরপর কী দেখলাম?
তিনি খুব সাধারণভাবে বললেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার নিজেদের উদ্যোগকে কঠিন ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে।
সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ আকাশ থেকে একটি যুদ্ধবিমান ঢাকা শহরের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ল। আগুনে দগ্ধ শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নিজেরা উঠে এসে হাঁটছে; এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হয়েছে। যে দৃশ্য দেখলে যে কেউ হয়তো ট্রমায় চলে যাবে। ওই স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হয়তো সরাসরি সেই দৃশ্য দেখেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে—এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ সিদ্ধান্ত সরকার দিনের বেলাতেই নিতে পারত। অথচ আমরা কী দেখলাম?
সরকারের পক্ষ থেকে রাত তিনটার দিকে ফেসবুকে এসে ঘোষণা করা হলো, পরের দিনের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।দিন দু-এক আগে এ সরকারকেই যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, এ কথা বলছি কারণ, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ‘ছাত্ররা আমার নিয়োগকর্তা’—সেই ছাত্রদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গভীর রাতে ফেসবুক এসে লাইভ করেন প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
এই আড়াই ঘণ্টার লাইভে মূল যে বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছেন, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়: বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম মানি মেকিং মেশিনে পরিণত হয়েছে এবং অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তিনি এটাও বলেছেন, এই সংগঠনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোড থেকে আসে। অর্থাৎ উপদেষ্টারা যেখানে থাকেন।
এদিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটা ফেসবুক পোস্ট করেছেন। যদিও ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তিনি বেশ কয়েকবার এডিট করেছেন। তবে প্রথমে যা লিখেছেন, সেটা হচ্ছে, নতুন একটি দলের মহারথীদের কয়েকজন দুর্নীতিতে জড়িত। এ ছাড়া তিনি এটাও বলেছেন, একটা সার্কেলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তাঁদের কেন প্রশ্রয় দেওয়া হলো? আপনারা যদি জানেনই কিছু মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাহলে সরকারের অংশ হিসেবে আপনাদের তো দায়িত্ব তাঁদের আইনের আওতায় আনা। সেটা না করে ফেসবুকে পোস্ট করতে হচ্ছে কেন? তা–ও আবার রাত তিনটায়!
এই সরকার কি মাঝরাতের ফেসবুকীয় সরকারে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা পেছানোর মতো সিদ্ধান্ত যখন মাঝরাতে নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন যখন রাত তিনটায় করতে হয়, তখন তো প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ এটা তো স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।
রাষ্ট্র যদি ভালো না থাকে তবে তার মাত্রা কতটুকু, সেটা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমিনুল ইসলাম প্রভাষক, এস্তোনিয়ান এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইউনিভার্সিটি
[email protected]