হৃদয়কে নিয়ে যত গন্ডগোল: কোথা থেকে শুরু, কোথায় গড়াল
Published: 27th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ব্যস্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। তবে এই সিরিজে না থেকেও দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিনিয়ত আলোচনায় তাওহিদ হৃদয়। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে মোহামেডানকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ১২ এপ্রিল হৃদয়ের আম্পায়ারের সঙ্গে অসদাচরণে সৃষ্ট ঘটনার জেরে আক্ষরিক অর্থেই দেশের ক্রিকেটে তোলপাড় চলছে। যা সিসিডিএম (ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্টোপলিস) তো বটেই, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেই নানা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। একঝলকে ঘুরে আসা এ পর্যন্ত হওয়ার ঘটনাপঞ্জিতে।১২ এপ্রিল ২০২৫
আবাহনীর মোহাম্মদ মিঠুনের বিপক্ষে পেসার ইবাদত হোসেনের বলে এলবিডব্লু আউট না দেওয়ায় আম্পায়ার তানভীর আহমেদের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা। ঘটনার এক পর্যায়ে মাঠে থাকা অন্য আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়, আঙুল উঁচিয়েও তাঁকে কথা বলতে দেখা যায়। এ ঘটনায় হৃদয়কে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় (৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট)। তবে শাস্তি ঘোষণার আগেই ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমে আম্পায়ারিং নিয়ে সমালোচনা করেন হৃদয়। বলেন, ‘তিনি (সৈকত) একজন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, আমরা তাঁকে সম্মান করি। কিন্তু আমরা নিজেরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।’ একপর্যায়ে এমনও বলেন, ‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশা আল্লাহ।’
১৩ এপ্রিল ২০২৫প্রকাশ্যে আম্পায়ারের সমালোচনার পর হৃদয়কে আরও ৩টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়, যার ফলে তার মোট ডিমেরিট পয়েন্ট দাঁড়ায় ৭। এরপর ম্যাচ রেফারি তাঁকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
১৭ এপ্রিল ২০২৫মোহামেডানের সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে (লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে) হৃদয় খেলেননি। মোহামেডান ওই ম্যাচে ৯ উইকেটে হেরে যায়।
২০ এপ্রিল ২০২৫মোহামেডানের দ্বিতীয় সুপার লিগ ম্যাচে (অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে, বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে) হৃদয়কে মোহামেডানের একাদশে রাখা হয়। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য এনামুল হক জানান, কীভাবে নিষেধাজ্ঞা কমানো হয়েছে, তিনি জানেন না। এদিনই তিনি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
২২ এপ্রিল ২০২৫আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা হৃদয়ের শাস্তি ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং ছাড়ার হুমকি দেন।
আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচের যে ঘটনা থেকে নিষেধাজ্ঞার সূত্রপাত।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।