রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে তিন দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন।

তিন বছর দুই মাস আগে বেসামরিকীকরণ ও নাৎসিমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে ইউক্রেনে যে সামরিক অভিযান শুরু করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন, তারপর এই দ্বিতীয়বার তার পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলো। 

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে নামে ইউক্রেন। দুই দেশের রক্তক্ষয়ী ও বিভৎস এই যুদ্ধে হাজার হাজার সেনা ও বেসামরিক মানুষের প্রাণ গেছে; ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের বাইরে।

এত দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে একাট্টা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়ে ফের ক্ষমতায় বসার পর যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ধারায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণা এলো।

বিবিসি লিখেছে, পুতিনের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ মে থেকে শুরু হয়ে ১১ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চলবে। এক টেলিগ্রাম বার্তায় পুতিনের পক্ষে এই ঘোষণা দিয়েছে ক্রেমলিন। 

অবশ্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া এখনো জানা যায়নি। কী শর্তে ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতি মানবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

এর আগে ইস্টার সানডে উপলক্ষে মাত্র ৩০ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতির কথা বলেছিল রাশিয়া; যদিও তা উভয় দেশ লঙ্ঘন করে হামলায় লিপ্ত হয়।

যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করার জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তির শর্তগুলো নিয়ে কথা বলছেন। পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে অংশ নিতে রোমে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই দিন ট্রাম্প বলেছিলেন, চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। 

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দিনই সোমবার রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। হতাহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। 

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ