Prothomalo:
2025-09-17@22:32:33 GMT

সুন্দর কাঠ ও ফুলের গামারি

Published: 30th, April 2025 GMT

ময়মনসিংহ শহরের ব্রহ্মপুত্র তীরের কাছারিঘাট ও শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান সকালে প্রাতভ্র৴মণকারীদের পদচারণে মুখর থাকে। কয়েক দিন আগে হেঁটে ফেরার পথে জেলা নির্বাচন অফিসের পেছনে গামারিগাছে ফুল ফুটতে দেখলাম। এই গাছের পাতা শীতে ঝরে গিয়েছিল। বসন্তে পত্রশূন্য গাছে ফুল ফুটেছে। ফুল ফোটার পর আবার পাতা গজাচ্ছে। কাঠের জন্য লাগানো হলেও এর হলুদ ফুলও কিন্তু সুন্দর। গামারি ফুল ভ্রমরের খুব প্রিয়; কারণ, এই ফুলে বেশ মধু আছে। তাই গামারির আরেক নাম ভ্রমরপ্রিয়া। টিয়া ও কাঠবিড়ালিরও প্রিয় এই ফুল। ফুলের নিচের দিকটা খয়েরি বাদামি।

গামারি সবুজ ও ঘন পাতাবিশিষ্ট, দ্রুত বর্ধনশীল পত্রঝরা বৃক্ষ। গামারি কাঠের জন্য লাগানো হলেও এর ফুলও কম সুন্দর নয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gmelina arborea, এটি Lamiaceae পরিবারের বৃক্ষ। ইংরেজিতে এই গাছ কান্ধার ট্রি, কাশ্মীর ট্রি, গুমার ট্রি, মালয় বুশ-বিচ, হোয়াইট বিচ, হোয়াইট টিক ইত্যাদি নামে পরিচিত। এ ছাড়া বাংলা নাম গামার, গাম্বার, গাম্ভারি, তার কাঠ, গাম্ভারিকা ইত্যাদি নাম রয়েছে। এর সংস্কৃত নামগুলো হলো মধুমতি, গাম্ভারি, সিন্ধুপর্ণী, ভাদ্রাপর্ণী, গামহার ইত্যাদি।

আদিনিবাস ভারতবর্ষ ও মিয়ানমার। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় জন্মে। ভারতের আসাম, দক্ষিণ বিহার, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল–সংলগ্ন এলাকায় এ গাছ হয়। বাংলাদেশের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় বেশি দেখা যায়।

এই গাছ লম্বায় ১৫ থেকে ৩৫ মিটার উঁচু হয়। গাছের প্রশাখা ও কুঁড়ি রোমশ। বাকল সাদা বা উজ্জ্বল ধূসর। পাতা পানপাতার আকৃতির, ২০ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতার ওপর দিক উজ্জ্বল সবুজ, নিচে পাণ্ডুর, বোঁটা ৬ থেকে ১০ সেন্টিমিটার লম্বা। শীতে পাতা ঝরে। এটি অত্যধিক খরা–সহনশীল। বসন্তকালে পাতাহীন ডালে ডালে দেখা যায় গাঢ় হলুদ ফুল। পাঁচটি পাপড়ি থাকলেও মাঝের পাপড়িটি অন্যগুলোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ লম্বা। বড় পাপড়িটির লম্বা পতাকার মতো অংশটি গাঢ় হলুদ। ফুলের গোড়ার দিকে হলুদ রঙের পাশাপাশি দেখা মেলে লালচে-বাদামি ও খয়েরি রঙের। ফুলের অনেক মিষ্টি গন্ধ, ফুল ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা, ২ ভাগে বিভক্ত। এর পুষ্পমধু ভোমরাদের খুবই প্রিয়। গামারির ফল দেখতে গোলাকার, ডিম্বাকৃতির, ফলে এক-দুটি বীজ হয়। ফল তিন সেন্টিমিটার চওড়া, শাঁসাল, পাকলে হালকা হলুদ হয়। শীতের পর ফুল এবং তাঁর দুই মাস পর ফল হয়।

কাঠ হলুদ, খানিকটা লাল অথবা সাদা। কাঠ টেকসই, সহজে কাজ করা যায়। সেগুনের পরেই গামারি কাঠের স্থান। এ জন্য ইংরেজিতে একে হোয়াইট টিক বলে। এই কাঠ আসবাব নির্মাণের জন্য বিশেষ উপযোগী। খোদাইয়ের কাজ, তক্তা, বাক্স, চিরুনি, খেলনা, গাড়ি ও নৌকা এই কাঠ দিয়ে বানানো যায়। এই কাঠের প্লাইউড বেশ ভালো।

গামারির অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। কটু–তিক্ত রস, গুরুপাক, উষ্ণবীর্য, কফ ও ত্রিদোষনাশক, বিষদোষ দাহ, জ্বর, তৃষ্ণা ও রক্তদোষনাশক। এর ছাল এবং কাঠে আছে অনেক তিক্ত পদার্থ ও স্টেরোল। পাতার রসে আছে জীবাণুনাশক শক্তি। কচি পাতার রস গনোরিয়া ও কাশিতে উপকারী। শিকড় কৃমিনাশক ও কুষ্ঠরোগে উপকারী। ক্ষতের পুঁজ বের করে দেয়। ফল চর্মরোগ ও চুল ওঠা বন্ধ করার মহৌষধ। শিকড় কৃমিনাশক ও কুষ্ঠরোগে উপকারী। গামারিগাছের পাতা এবং ফল গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলো পুষ্টিকর এবং প্রাণীদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

চয়ন বিকাশ ভদ্র: অধ্যাপক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

জিল হোসেন মারা গেছেন, আদালতে তাঁর লড়াই শেষ হবে কবে

জিল হোসেনের ৭২ বছরের জীবনের ৪৭ বছরই কেটেছে আইনি লড়াইয়ে। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা পাসের সনদ পেতে, এরপর ক্ষতিপূরণের দাবিতে তাঁর এই দীর্ঘ লড়াই। লড়াই এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যেই মারা গেছেন জিল হোসেন।

জিল হোসেনের মৃত্যুর পর তিন বছর ধরে লড়াইটা করে যাচ্ছেন স্ত্রী ও তাঁর সন্তানেরা। কিন্তু পরিবারটির বিচারের অপেক্ষা শেষ হয়নি।

পরিবার ও মামলার নথিতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, জিল হোসেনের জন্ম ১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি। ১৯৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষে তিনি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের (কৃষি) পরীক্ষার্থী ছিলেন। এই পরীক্ষা হয় ১৯৭৩ সালে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার ফলাফলে তাঁকে অকৃতকার্য ঘোষণা করে। ফলাফল পুনর্বিবেচনা চেয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আবেদন করেন জিল হোসেন। কিন্তু সেই আবেদনে কাজ হয়নি।

১৯৭৫ সালে জিল হোসেন আবার পরীক্ষায় অংশ নেন, কিন্তু তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এসবের প্রতিকার চেয়ে ১৯৭৫ সালের ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহের প্রথম মুনসেফ আদালতে তিনি মামলা করেন। মামলায় তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রাপ্ত নম্বরের (১৯৭৩ সালে দেওয়া পরীক্ষায়) সঙ্গে ভগ্নাংশ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নম্বরের সঙ্গে ভগ্নাংশ যোগ না করে তাঁকে অকৃতকার্য ঘোষণা করে।

সেই আইনি লড়াইয়ের শুরু। নিম্ন আদালত পেরিয়ে বছরের পর বছর উচ্চ আদালতেও ছুটেছেন তিনি। সিরাজগঞ্জ সদরের চিলগাছা গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকতেন জিল হোসেন। ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালাতেন। সংসারে স্ত্রী এবং চার ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে। আইনি লড়াই নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মারা যান জিল হোসেন। এর পর থেকে মামলায় পক্ষ হয়ে তাঁর স্ত্রীসহ উত্তরাধিকারীরা লড়াই করে যাচ্ছেন।

বাবা উচ্চ আদালতের রায় দেখে যেতে পারেননি। বাবা নেই, বুকে চাপা কষ্ট হয়। বাবার কাছে শুনেছি, মামলা চালাতে গিয়ে জমিসহ অনেক কিছুই হারাতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বাবার জীবন ধ্বংস হয়েছে, আমাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।নূর হোসেন, বাদী জিল হোসেনের ছোট ছেলে

জিল হোসেনের ছোট সন্তান নূর হোসেন গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা উচ্চ আদালতের রায় দেখে যেতে পারেননি। বাবা নেই, বুকে চাপা কষ্ট হয়। বাবার কাছে শুনেছি, মামলা চালাতে গিয়ে জমিসহ অনেক কিছুই হারাতে হয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বাবার জীবন ধ্বংস হয়েছে, আমাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

আরও পড়ুনশিক্ষাসনদ নিয়ে ৪৮ বছরের আইনি লড়াই: ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রায় বাস্তবায়নে বাধা নেই০৮ অক্টোবর ২০২৩

নূর হোসেন আরও বলেন, ‘মা এবং ভাইবোনেরা এখন মামলা চালাচ্ছি। মায়ের বয়স ৬৯ বছর। তিনিও নানা রোগে ভুগছেন। তিনিও চূড়ান্ত রায় দেখে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভ টু আপিল এখন আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। বাবা মারা যাওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো অনুশোচনা নেই, এটা কষ্টের।’

আইনি লড়াই

জিল হোসেন যখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (কৃষি) দ্বিতীয় পর্বের চতুর্থ বর্ষের পুরোনো পাঠ্যক্রমের চূড়ান্ত পরীক্ষার্থী ছিলেন, তখন তাঁর বয়স ২৩ বছর। ময়মনসিংহের মুনসেফ আদালতে করা মামলায় জয়ী হন তিনি। আদালত ১৯৭৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ভগ্নাংশ নম্বর যোগ না করে তাঁকে অকৃতকার্য করাকেও বেআইনি ঘোষণা করা হয়।

তবে জিল হোসেনের লড়াই তখনো বাকি। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জজ আদালতে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৬ সালের ৩১ জানুয়ারি এই আদালতের দেওয়া রায়েও জিল হোসেনের বহিষ্কারাদেশ বেআইনি ঘোষণা করা হয়।

একই বছর হাইকোর্টে আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্ট ১৯৭৬ সালের ২৪ আগস্ট মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য প্রথম মুনসেফ আদালতে পাঠান। এরপর ১৯৭৮ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রথম মুনসেফ আদালত ভগ্নাংশ নম্বর যোগ করে ৩০ দিনের মধ্যে জিল হোসেনের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুনসেবাদাতা বা গ্রহীতাদের সন্তুষ্টির মূল্যায়ন হয়নি২৮ এপ্রিল ২০২২

এর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবার জেলা জজ আদালতে আপিল করে, যা নামঞ্জুর হয়। পরে হাইকোর্টে আপিল করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর ওপর ১৯৮৩ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় দেওয়া হয়। এ রায়ে বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।

অতঃপর সনদ, ক্ষতিপূরণ মামলা

পরিবার ও মামলাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাইকোর্টের রায়ের পর ১৯৮৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জিল হোসেনের একটি আবেদন গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁকে পাস নম্বর দিয়ে ১৯৯৭ সালের ২২ অক্টোবর নম্বরপত্রের সনদ দেওয়া হয়। তখন জিল হোসেনের বয়স ৪৭ বছর। তখন তাঁর সরকারি চাকরির বয়সসীমা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

লিভ টু আপিল বিচারাধীন উল্লেখ করে একের পর এক সময় নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টর স্থগিতাদেশ না থাকায় মামলা চলতে আইনগত বাধা নেই। অথচ মামলাটি চলছে না, যা জিল হোসেনের পরিবারের জন্য ভোগান্তির।চঞ্চল কুমার বিশ্বাস, বাদীপক্ষের আইনজীবী

এরপর ২০০০ সালের ১৮ অক্টোবর ক্ষতিপূরণ দাবি করে অধস্তন আদালতে মামলা করেন জিল হোসেন। মামলায় অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের রায় ১৪ বছর ৯ মাস পরে কার্যকর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কাজে তাঁর জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে সরকারি চাকরির সম্ভাবনাও।

ক্ষতিপূরণের এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৬ আগস্ট রায় দেন ময়মনসিংহের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে জিল হোসেনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি টাকা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

১৪ বছর পর নিষ্পত্তি

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ৪ জুন হাইকোর্ট শর্ত সাপেক্ষে ময়মনসিংহের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ স্থগিত করেন। শর্ত হিসেবে ২ কোটি টাকার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ, অর্থাৎ ২৫ লাখ টাকা ৩ মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দিতে বলা হয়। এতে ব্যর্থ হলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানান, জিল হোসেন মারা যাওয়ার পর আপিল শুনানির জন্য উঠলে ১৩ বছর আগে হাইকোর্ট ২ কোটি টাকার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা সামনে আসে। এ অবস্থায় হাইকোর্ট আপিলকারী পক্ষকে ২৫ লাখ টাকা জমা দিয়ে আসতে বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালে ৪ নভেম্বর ওই অর্থ জমা দেয়।

বিষয়টি আপিল বিভাগে বিচারাধীন। বিচারাধীন থাকলে নিম্ন আদালতে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তও আছে। আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুত আছি।এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে নিয়োগ দেওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের করা আপিল খারিজ করে ২০২৩ সালের ৭ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় সংশোধন সাপেক্ষে বহাল রাখেন হাইকোর্ট। রায়ের দিন থেকে ওই অর্থের বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে তারা (জিল হোসেনের পরিবার) লভ্যাংশ পাবেন বলেও জানানো হয়। অবশ্য এর আগে শর্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জমা করা ২৫ লাখ টাকা ওই অর্থ থেকে বাদ যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভ টু আপিল

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে লিভ টু আপিল করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনটি ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে সেদিন তৎকালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন। লিভ টু আপিল ক্রম অনুসারে শুনানি হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় লিভ টু আপিলটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের গত ৩১ আগস্টের কার্যতালিকায় ৫০৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

জিল হোসেনের পরিবারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালের ৯ মার্চ আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস নিয়োগ পান। তাঁকে নিয়োগ দেয় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি। চঞ্চল কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতে অর্থ আদায়ে জারি মামলার (২০০৯ সালে করা) কার্যক্রম অগ্রসরের জন্য বাদীর উত্তারাধিকারীকারেরা আবেদন করেন।

আরও পড়ুনসনদ ও ক্ষতিপূরণের জন্য ৪৭ বছরের আইনি লড়াই ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, লিভ টু আপিল বিচারাধীন উল্লেখ করে একের পর এক সময় নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ না থাকায় মামলা চলতে আইনগত বাধা নেই। অথচ মামলাটি চলছে না, যা জিল হোসেনের পরিবারের জন্য ভোগান্তির।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে নিয়োগ দেওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আপিল বিভাগে বিচারাধীন। বিচারাধীন থাকলে নিম্ন আদালতে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তও আছে। আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুত আছি।’

আরও পড়ুন৩৩ বছর কেটে গেছে, কাজল কথা রেখেছেন০৫ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মহাসড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ 
  • জিল হোসেন মারা গেছেন, আদালতে তাঁর লড়াই শেষ হবে কবে
  • ময়মনসিংহে সিলিন্ডার লিকেজে হোটেলে অগ্নিকাণ্ড 
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড় ধসের শঙ্কা