মার্চ পর্যন্ত রীতিমতো উড়ছিল ইন্টার মিলান। তবে এপ্রিলে এসেই ধীরে-ধীরে ছন্দ হারাতে থাকে ক্লাবটি। এই সময়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৮ ম্যাচে মাত্র ২টি জয় পায় সিমিওনে ইনজাগির দলটি। ঘরের প্রতিপক্ষ এসি মিলানের বিপক্ষে ইতালিয়ান কাপের সেমিফাইনালে ৪-১ ব্যবধানে হেরে ট্রেবলের স্বপ্ন জলাঞ্জালি দিতে হয়েছে। শেষ ২ ম্যাচে হেরে সিরি ‘আ’ শিরোপার দৌড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী নাপোলি থেকে পিছিয়ে গিয়েছে ৩ পয়েন্টে।

এমন অবস্থায় ইন্টার মিলান বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার বিপক্ষে। তবে আত্মবিশ্বাস তলানিতে থাকা নেরাজ্জুরিদের ম্যানেজার সিমিওনে আশা হারাচ্ছেন না। আজ রাতের হাই ভোল্টেজ ম্যাচের আগে তিনি দলকে ‘ভয় না পেয়ে’ মাঠে নামতে বলেছেন এবং আহ্বান জানিয়েছেন গত সপ্তাহের হতাশাজনক ফলাফল ভুলে যেতে।

আরো পড়ুন:

‘অস্ত্রাগারে’র দেয়াল ভেঙে ফাইনালের পথে পিএসজি

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল পর্বের সময়সূচি

সবশেষ তিনটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হেরেছে ইন্টার। এরআগে ২০১৭ সালের হারের হ্যাটট্রিক দেখেছিল নেরাজ্জুরিরা। এক সপ্তাহ আগেও ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন বিভোর দলটা আজ রাতে শিরোপাহীন থাকার শঙ্কা নিয়েই অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামবে।

ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সিমিওনে বলেন, “গত সপ্তাহের সব কিছু ভুলে যাও। গত চার বছরে এই খেলোয়াড়রা অসাধারণ কিছু করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। গত সপ্তাহ সেটা মুছে দিতে পারে না। এটা দুর্দান্ত এক মৌসুম। আমরা শেষ তিনটি ম্যাচ বিশ্লেষণ করেছি। আমাদের আরো ভালো করতে হবে। (গত সপ্তাহ পর্যন্ত) আমরা প্রতিটি ট্রফির জন্য লড়াইয়ে ছিলাম। অনেকে বলছিল যে সিরি আ’তে সেরা চারে থাকাটাও কঠিন হবে। আপনি কখনো আমাকে এই ছেলেদের বা এই গ্রুপের বিরুদ্ধে খারাপ কিছু বলতে শুনবেন না। তাদের জন্যই আমরা গত চার বছরে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছি।”

ইনজাগি ইন্টারের কোচ হিসেবে একবার সিরি ‘আ’ ও দুইবার কোপা ইতালিয়া জিতেছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগ ২০২৩ সালের রানার্সআপ। এবার তাদের সামনে বার্সা। যারা লা লিগার শীর্ষে এবং এই সপ্তাহেই কোপা দেল রে জিতেছে। ইনজাগি বার্সার কোচ হানসি ফ্লিকের প্রশংসা পঞ্চমুখ, “আমরা সম্ভবত এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলছি। আমাদের টেকনিক্যালি খুব পরিষ্কার থাকতে হবে। ফ্লিক একজন দুর্দান্ত কোচ, যিনি অসাধারণভাবে আক্রমণাত্বক দল সাজিয়েছেন। তারা বল হারালেও দ্রুত ফেরত পায়। তাদের দুর্দান্ত ফরোয়ার্ড, মিডফিল্ডার খেলোয়াড় আছে।”

এই সপ্তাহে ইন্টার বার্সার বিপক্ষে খেলবে চোটাক্রান্ত ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ডকে ছাড়াই। ফরোয়ার্ড মার্কুস থুরাম অনুশীলনে ফিরলেও ম্যাচে খেলার ফিটনেস নিয়ে শংসয় আছে। যদি তিনি ফিট থাকেন, তবে লওতারো মার্তিনেজের সঙ্গে আক্রমণে থাকবেন। তারা দু’জন মিলে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৮টি গোল করেছেন।

ইউরোপ সেরার মুকুটের জন্য বার্সার অপেক্ষা দীর্ঘ ১০ বছরের। সবশেষ ২০১৪-১৫ মৌসুমে তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছিল। অন্যদিকে, ইতালিয়ান ইন্টারের অপেক্ষা আরও বেশি। তারা সর্বশেষ ইউরোপ সেরা হয়েছিল ২০০৯-১০ মৌসুমে। সেবার ফাইনালে উঠার পথে সেমিফাইনালে ইতিহাসের সেরা বার্সাকে হারিয়েছিল জোসে মোরিনহোর ইন্টার।

ম্যাচটি মাঠে গড়াবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ইউরোপের দুই দেশ স্পেন ও পর্তুগালে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সোমবার থেকে ভুগছিল জনজীবন। এই বিভ্রাটে বিমান চলাচল এবং গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। জরুরি অবস্থা ছাড়া হাসপাতালগুলোর অপারেশনও স্থগিত করতে হয়। এমন অবস্থায় বার্সা ও ইন্টারের মধ্যকার ম্যাচটি না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে শেষ খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আপাতত স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন কিংবা উয়েফার পক্ষ থেকে খেলা স্থগিতের কোনো বিবৃতি আসেনি।

আগামী মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগে সান সিরোতে বার্সেলোনাকে আতিথ্য দেবে ইন্টার। বিজয়ী দল ৩১ মে মিউনিখে ফাইনালে পিএসজি বা আর্সেনালের মুখোমুখি হবে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ ইন ট র ম ল ন স ম ফ ইন ল ইন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ভয়ংকর যত বিমান দুর্ঘটনা

ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয়েছে। এই দুর্ঘটনাটি ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। নিচে ভারতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিমান দুর্ঘটনা তুলে ধরা হলো–

নভেম্বর ১৯৯৬
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর হরিয়ানার চরখি দাদরিতে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ আকাশপথের সংঘর্ষ ঘটে। সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৪৭ এবং কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের ইলিউশিন আইআই-৭৬ প্লেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই প্লেনে থাকা ৩৪৯ জনের সবাই নিহত হন। 

জানুয়ারি ১৯৭৮
১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি, মুম্বাই থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ৮৫৫ যান্ত্রিক ত্রুটি এবং পাইলটের দিক পরিবর্তনের কারণে আরব সাগরে ডুবে যায়। বিমানে থাকা ২১৩ যাত্রীর সবাই মারা যান।

মে ২০১০
২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২ বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি খাদে পড়ে যায়। ১৬৬ আরোহীর মধ্যে ১৫৮ জনই নিহত হন। 

জুন ১৯৮৫
১৯৮৫ সালের ২৩ জুন এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৮২ কানাডা থেকে ভারত যাওয়ার পথে আয়ারল্যান্ড উপকূলে মাঝ আকাশে বিস্ফোরণে উড়ে যায়। বিমানে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাতা বোমা ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়, যা বিশ্ব ইতিহাসে প্লেনে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।
জুলাই ২০০০
কলকাতা থেকে রাজধানী নয়াদিল্লিগামী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ারের একটি ফ্লাইট ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় শহর পাটনার আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫০ জনেরও বেশি প্রাণ হারান।

আগস্ট ২০২০
২০২০ সালের আগস্টে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইট কেরালার কোঝিকোড় বিমানবন্দরে বৃষ্টিভেজা রানওয়েতে অবতরণের সময় ছিটকে গিয়ে দুই ভাগ হয়ে যায়। এতে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত খারাপ এবং দৃষ্টিসীমাও ছিল কম। খবর রয়টার্সের।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবার নিঃশব্দ সংগ্রাম
  • কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে
  • ভারতীয় উড়োজাহাজের ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনা
  • ভারতে ভয়ংকর যত বিমান দুর্ঘটনা