ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ ভেঙে দিল প্রশাসন
Published: 30th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত জয়নুল উদ্যানে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্ত মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে মঞ্চটি ভেঙে ফেলা হয়। অভিযান চলাকালে পার্শ্ববর্তী একটি পার্কেরও একাধিক স্থপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
মুক্তমঞ্চ ভেঙ্গে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ময়মনসিংহের কবি সাহিত্যিকরা। তারা জানান, পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রশাসন একটি ভুল কাজ করল। প্রায় ৪০ বছর ধরে এ স্থানটিতে সাহিত্য সংসদের ব্যবস্থাপনায় কবি সাহিত্যকদের আলোচনা ও মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজিদ বলেন, “কাগজপত্রে সাহিত্য সংসদ বলতে সেখানে কিছু নেই। অবৈধভাবে কোনো জায়গা দখল করলে তো হবে না। সাহিত্য সংসদ আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করে দেব। ওই এলাকাটি মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা প্রশাসন ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন যৌথভাবে জয়নুল উদ্যানের ভেতরে ও বাইরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক মো.
মঞ্চটি ভেঙে ফেলার খবর পেয়ে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
লেখক আবুল কালাম আজাদ জানান, পুরো ঘটনাটি দুঃখজনক। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান। তিনি দায়ীদের শাস্তিও দাবি করেন।
কবি ও সাহিত্যিক ইয়াজদানী কোরায়শী কাজল বলেন, “পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রশাসন একটি ভুল কাজ করল।”
সমাজকর্মী ওহিদুর রহমান ফেসবুকে লেখেন, “যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন দেশ বরেণ্য বুদ্বিজীবীরা, জ্ঞানী গুণীরা ৪০ বছরের সেই ইতিহাস মুছে ফেলার আগে ভেবে দেখা উচিত ছিল।”
এ বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলমকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।