ঢাকায় পুলিশ সদস্য হুমায়ুন হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৬
Published: 1st, May 2025 GMT
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী সালমা বেগম (৩২), ফজলে রাব্বি (২৩), মরিয়ম বেগম (৩৮), পলি বেগম (৩৫), মো.
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সকালে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ দয়াগঞ্জ বটতলা জজ মিয়ার বাড়ির ভাড়া বাসার ফটকের কাছ থেকে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের (৪৪) মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। পরদিন মঙ্গলবার ওই ঘটনায় নিহত হুমায়ুনের ভাই খোকন হাওলাদার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, হুমায়ুন কবির ডিএমপির পরিবহন বিভাগে জলকামানের চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী সালমা বেগম ও দুই সন্তানকে নিয়ে দয়াগঞ্জে থাকতেন। সালমার সঙ্গে তাঁর আত্মীয় মো. রাজীব হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তা হুয়ায়ুন জানতেন। এ নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল একটি পারিবারিক সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সালমা ও তাঁর ভাই মো. মানিকের সঙ্গে হুমায়ুন কবিরের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে সালমা বেগম ও তাঁর বন্ধু রাজীব হোসেন ও ওই ভবনের চারতলায় থাকা তাঁর আত্মীয় মরিয়মসহ আরও কয়েকজন মিলে হুমায়ুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহত হুমায়ুনের দুই সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সালমা বেগম ও মরিয়ম বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আজ ভোর পাঁচটার দিকে বরিশাল থেকে শুভ, রাফি, পলি ও কায়েসকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্য হুমায়ুনের দুটি মুঠোফোন শুভর কাছ থেকে জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সালমা বেগমের সঙ্গে তাঁর আত্মীয় মো. রাজীব হোসেনের এক বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হুমায়ুন ডিউটি শেষে বাসায় ফেরেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁর স্ত্রী সালমা খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে খাওয়ান। এতে হুমায়ুন অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর রাত আড়াইটার দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁর হাত-পা গামছা দিয়ে বেঁধে এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেন। লাশ অন্যত্র সরাতে ব্যর্থ হয়ে ভোর চারটার দিকে লাশটি বাড়ির ফটকের পাশে ফেলে রাখে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বুধবার সালমা ও মরিয়ম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পলাতক রাজীবসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য হ ম য় ন গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’