সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, “রাজনৈতিক তোষামোদ নয়, মেরুদণ্ড সোজা রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক চাপ এলে সেটি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। তোষামোদ করে দায়িত্ব এড়ানো যাবে না। সরকার কঠিন ও সাহসী সিদ্ধান্তে সবসময় পাশে থাকবে।”

শুক্রবার (২ মে) সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনাবিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

জমির উর্বর টপ সয়েল রক্ষা এবং ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা ও বিক্রি বন্ধ করতে হবে। ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে যত্রতত্র বাজার বসানো ও অব্যবস্থাপনার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে।”

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড.

বদিউল আলম মজুমদার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে কাঠামোগত সংস্কার না করলে আবারও স্বৈরাচার ফিরতে পারে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মতপার্থক্য দূর করার চেষ্টা করছি, যাতে একটি জাতীয় সনদের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হয়।”

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভূঁইয়া, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামানসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। সভায় কুমিল্লার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ