কুমিল্লায় দুই রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ প্রদানের সত্যতা পেয়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া ওই চেয়ারম্যান চৌদ্দগ্রাম ১১ নং চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের। 

শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহি স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এ বহিষ্কার আদেশ প্রদান করা হয়।

আদেশে উল্লেখ করা হয়, চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) মো.

আবু তাহেরের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গার অনুকূলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যুকরণ ও নিজের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্য ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর, সচেতনতার অভাব, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯- এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী রেজিস্টার জেনারেল, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান আবু তাহের কর্তৃক সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যান আবু তাহেরকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ভিয়েতনাম যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ হুমায়রা ও শারমিন আক্তার নামে দুইজনই রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুন থানা কুমিল্লার ডিএসবির উপপরিদর্শক ইমাম হোসেন বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরই ২৭ জুন থানা পুলিশ হুমায়রা ও শারমিন আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, দুই রোহিঙ্গা নারী উপজেলার ১১ নং চিওড়া ইউনিয়নের কাজী খবির উদ্দিন ওই দুই নারীর পিতা সেজে পরিষদ থেকে দুইটি জন্ম সনদ তৈরি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরির সহায়তা করেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের নামে জন্মসনদ ইস্যুর ঘটনাটি জন্ম নিবন্ধন শাখার রেজিস্টার জেনারেল আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করলে আমি তার সঠিক জবাব প্রদান করি। কারও বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করে সনদ দেয়া সম্ভব নয়। ওই চেয়ারম্যানের ভাষ্য, জন্মসনদ গ্রহীতা ওই দুই নারীর কথিত পিতা কাজী খবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ডিএসবি মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলায় পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হয়। চার্জশিটে আমাকে সাক্ষী করা হয়। বরখাস্ত করার বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবেলা করব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরখ স ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ