ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোডে রেললাইনে দাঁড়িয়ে এক ট্রেনের ভিডিও করার সময় উল্টো দিক থেকে আসা আরেক ট্রেনে কাটা পড়ে রাজশাহী কলেজের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২ মে) বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত শিক্ষার্থীর নাম ইশতিয়াক আহমেদ রাফিদ। তিনি রাজশাহী কলেজে বাংলা বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী ছিলেন। ঢাকার খিলক্ষেতে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন।  

রাফিদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন আজগবি গ্রামে। তার বাবার নাম রেজাউল করিম।

রেজাউল করিম যুব উন্নয়ন অফিসের কর্মকর্তা। রাফিদে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি ছোট বোন আছে। 

রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ইশতিয়াক খুব ভালো ও শান্ত ছেলে ছিল। তার ছবি তোলার শখ ছিল এবং খুব সুন্দর ছবি তুলতে পারতো। তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য কষ্টকর। তার এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’

দুর্ঘটনার সময় রাফিদের খালাতো ভাই ঢাকার কুর্মিটোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মুস্তাফিজুর রহমান তার সঙ্গে ছিলেন। 

তিনি বলেন, “ভাইয়া (রাফিদ) টঙ্গী থেকে কমলপুরগামী একটি ট্রেনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করছিলেন। এমন সময় অন্য লাইনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আরেক ট্রেনে কাটা পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ভাইয়া আমাকে বলেছিলেন ভিডিও করার সময় ট্রেন আসে কি না খেয়াল রাখতে। তিনি ভিডিও করার সময় ট্রেন চলে আসল। আমি ভাইয়াকে চিৎকার করে ডাকছিলাম, কিন্তু ভাইয়া শুনতে পাননি।”

ঢাকা রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস জানান, রাফিদের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কাকরাইলে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জের গ্রামে নেওয়া হয়।

রাফিদের মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছাঁয়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে সহপাঠী ও বন্ধুরা আবেবগঘন পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ঢাকা/ফারজানা /ইভা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ড ও কর র র সময় বগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

চুক্তি হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি সাপেক্ষে গোপনীয়তার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় যে গোপনীয়তার বিষয়টি ছিল, চুক্তি সই হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি সাপেক্ষে তা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর শিগগিরই হয়তো যৌথ বিবৃতি আসবে। তথ্য অধিকারের আলোকে এটা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তো‌জার সঙ্গে আলাপচারিতায় বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। গোলাম মোর্তোজা ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বাণিজ্য চুক্তি কাজে লাগাতে হলে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে এ নিয়ে আত্মসন্তুষ্টির সুযোগ নেই।

গোপনীয়তার বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আন্তর্জাতিক রীতিতে নির্দিষ্ট, শুধু তা–ই নয়, স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক ও বিমা চুক্তিতে উপনীত হয়, তখন এই গোপনীয়তার বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। এমনকি দুজন ব্যক্তি সম্পদ হস্তান্তর করলেও এ ধরনের বিষয় থাকে।

শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র যেখানে চুক্তির মূল নিয়ামক হিসেবে নিজস্ব নিরাপত্তার কথা বলেছে, সেখানে আলোচনায় গোপনীয়তার শর্ত থাকা অবশ্যম্ভাবী। এর মাধ্যমে দেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো উপাদান থাকলে আমরা সে চুক্তিতে করব না, সেটাই স্বভাবিক বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দিন। নিজস্ব স্বার্থ বিসর্জন দেওয়ার সুযোগ নেই। নিজস্ব স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে সক্ষমতার ঘাটতি হবে। তাতে বাণিজ্য চুক্তি করে লাভ হবে না। স্বল্প মেয়াদে বা দীর্ঘ মেয়াদে যদি আমাদের বাণিজ্য সক্ষমতা হ্রাস পায়, কিংবা আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির কোনো ধরনের ক্ষতি হয়, সেই চুক্তি কোনোভাবেই পালনযোগ্য নয়।’

তবে আলোচনা চলাকালে দুঃখজনকভাবে চুক্তিটি ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দিন। সেখানে দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু নেই। যেগুলো দেশের স্বার্থবিরোধী হতে পারত, সেখান থেকে বাংলাদেশ পরিষ্কারভাবে বের হয়ে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র মোটেও বিষয়টি উত্থাপন করেনি। এই বিষয়টি একমুখী। গত বছর বোয়িং ১২টি বিমান বানিয়েছে। সুতরাং এই চুক্তি অনুযায়ী তারা হয়তো ২০৩৭ সালে প্রথম বিমান সরবরাহ করতে পারবে। বরং তাদের আগ্রহ ছিল কৃষিপণ্য নিয়ে। বাংলাদেশ প্রতি ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্রও কৃষিপণ্যের বৃহৎ উৎপাদক। বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের ভিত্তিতে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর কথা বলেছে, যেসব পণ্য এমনিতেই বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলারের মতো। ফলে বাংলাদেশে তুলা, সয়াবিন, ভুট্টা, গমজাতীয় পণ্য আমদানি বাড়িয়ে ২০০ কোটি ডলারের বাণিজ্যঘাটতি কমানোর চেষ্টা করতে পারে।

বোয়িং বিমান খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিমানের পরিচালনা সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে বিমান কিনে তেমন লাভ হবে না। অন্তর্বর্তী সরকার সেই চেষ্টা করছে। তবে বিমানের পক্ষে অতিরিক্ত এক কোটি যাত্রী পরিবহনের সুযোগ আছে। সেই বিবেচনায় ২৫টি বিমান খুব বেশি কিছু নয়। বিমানের পরিচালন সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ