দুপুর গড়িয়ে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে। বরিশালের লাহারহাট বন্দরে বুখাইনগর নদের পাড়ে শুরু হয়েছে মাছের পাইকারদের ব্যস্ততা। ছোট ছোট কোষা নৌকা নিয়ে আড়িয়ালখাঁ নদের শাখা ডাকাতিয়া-কালাবদর নদী থেকে মাছ ধরে ফিরছেন জেলেরা। নৌকার খোলে তপসি, পোয়া, বায়লা, টেংরাসহ হরেক রকমের মাছ। আছে মৌ কাঁঠালি চিংড়ি, গলদাও। প্রতিটি নৌকায় নারী-পুরুষ-শিশু-সম্পূর্ণ পরিবার। নদীই তাঁদের জীবিকা, নদীই সংসার।

দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে লাহারহাটের এই পাইকারি মাছের হাট। এখানকার মাছ শুধু বরিশাল নয়, পাঠানো হয় ঢাকার বড় আড়তেও। মাছ ধরে ফেরা নৌকাগুলো ঘাটে বেঁধে জাল ছাড়াচ্ছেন জেলেরা। জালের সঙ্গে উঠে আসা আবর্জনা ঝেড়ে ফেলছেন। দক্ষিণ পারে লাহারহাট বাজার, উত্তর পারে সারিবাঁধা বড় নৌকায় এই জেলেদের বসতি—তাঁরা মান্তা জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত।

এই সম্প্রদায়ের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না মিলেমিশে আছে নদী ও নৌকায়। যুগের পর যুগ তাঁরা বাস করছেন এই জলঘেরা জীবনে। এই জেলেদের মধ্যে আগেভাগে ঘাটে ফিরেছেন মো.

আয়নাল, সঙ্গে তাঁর স্ত্রী পিয়ারা ও তিন ছেলে—১০ বছরের জাহাঙ্গীর, ৮ বছরের আসিফ ও ২ বছরের ইছা। বয়স মাত্র ৩০ বছর হলেও আয়নালের পরিবারের পরিধি বড়। রোদ-বৃষ্টি-লোনাজলে পুড়ে-ভিজে তাঁদের গায়ের রং কালচে হয়ে গেছে। আর অপুষ্টিতে শরীর জীর্ণ-শীর্ণ।

ঘাটের পাশে নদীভাঙন রোধে ফেলা জিও ব্যাগের ওপরে বসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে জাল ছাড়াচ্ছেন আয়নাল। ছোট ছেলে ইছা নৌকার গলুইয়ে বসে খেলছে। কোমরে প্লাস্টিকের ভাসা বাঁধা, নদীতে পড়ে গেলেও যেন ভেসে থাকে। অতল নদী, তবু শিশুটি নৌকার গলুইয়ে বসে পানি ধরছে, যেন ডরভয়হীন জলবীর! মা–বাবাও নির্ভার। কী মাছ পেলেন, জিজ্ঞেস করতেই আয়নাল বলেন, ‘অল্প কয়ডা পোমা, রামসোস (তপসি) পাইছি। এহন আর গাঙ্গে হেই রহম মাছ নাই।’

মান্তা সম্প্রদায়ের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না মিলেমিশে আছে নদী ও নৌকায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আয়ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে হাসনাতের গাড়িতে হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মী আল আমিন খন্দকার বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে বাসন থানায় এই মামলা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান।

এর আগে আজ সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, যে সরকারকে তারা বিদায় করেছেন, সেই সরকারের লোকজনই এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তারা নানা ইস্যু তৈরি করার জন্য এই হামলা করেছেন। 

তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে পুলিশের একাধিক দল হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ