কুখ্যাত আলকাট্রাজ কারাগার পুনরায় চালুর নির্দেশ ট্রাম্পের
Published: 5th, May 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত কুখ্যাত আলকাট্রাজ কারাগারটি পুনর্নির্মাণ ও পুনরায় চালু করার জন্য ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনসকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিপজ্জনক অপরাধীদের কুখ্যাত কারাগারটিতে আটক রাখতে চান ট্রাম্প।
আরো পড়ুন:
বিদেশি সিনেমার ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র
স্থানীয় সময় রবিবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্ট করে বলেন, “আলকাট্রাজ পুনর্নির্মাণ করুন এবং খুলুন!”
ট্রাম্প আরো বলেন, “আমরা যখন আরো সিরিয়াস জাতি ছিলাম, তখন আমরা সবচেয়ে বিপজ্জনক অপরাধীদের আটকে রাখতে এবং ক্ষতি করতে পারে এমন কারো থেকে তাদের দূরে রাখতে দ্বিধা করতাম না।”
১৯৬৩ সালে বন্ধ হওয়ার আগে আলকাট্রাজের ফেডারেল কারাগারটিতে আল ক্যাপোনের মতো কুখ্যাত মার্কিন অপরাধীদের রাখা হতো। এটি এখন সান ফ্রান্সিসকোর সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে একটি।
ট্রুথ সোশ্যল পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “আজ আমি বিচার বিভাগ, এফবিআই এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সঙ্গে কারাগার ব্যুরোকে একটি উল্লেখযোগ্যভাবে বর্ধিত এবং পুনর্নির্মিত আলকাট্রাজ পুনরায় খোলার নির্দেশ দিচ্ছি।”
ফ্লোরিডা থেকে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “কারাগারটি পুনরায় চালু করা ‘আমার মনে আসা একটি ধারণা’ এবং আমি তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “এটি আইন-শৃঙ্খলার প্রতীক।”
দ্বীপের অবস্থান, ঠান্ডা পানি এবং তীব্র স্রোতের কারণে আলকাট্রাজকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আলকাট্রাজ থেকে কোনো বন্দীর সফল পালানোর রেকর্ড নেই, যদিও পাঁচজন বন্দী ‘নিখোঁজ এবং ডুবে মারা গেছে’ হিসেবে নথিভুক্ত করা আছে।
ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনস (বিওপি) ওয়েবসাইট অনুসারে, আলকাট্রাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, কারণ এর পরিচালনা চালিয়ে যাওয়া খুব ব্যয়বহুল ছিল, মূলত এর দ্বীপের অবস্থানের কারণে। বিওপি ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, এটি পরিচালনা করা অন্য যেকোনো ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ব্যয়বহুল ছিল।
ট্রাম্পের নতুন এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন সাবেক হাউজ স্পিকার এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা ন্যান্সি পেলোসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ এ একটি পোস্টে তিনি বলেন, “৬০ বছরেরও বেশি সময় আগে আলকাট্রাজ একটি ফেডারেল কারাগার হিসেবে বন্ধ হয়ে যায়। এটি এখন একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র আলক ট র জ
এছাড়াও পড়ুন:
সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর, মহাসড়কে উল্টো পথে অটোরিকশার দাপট, ঘটছে দুর্ঘটনা
মহাসড়কে তিন চাকার অটোরিকশা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে উল্টো পথে দাপটের সহিত চলছে ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা বা ইজিবাইক।
এতে একদিকে সড়কে যানবাহন চলাচলে বিশৃংখলার সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে এই গাড়িগুলো চলাচল করছে। গত ছয় মাসে মহাসড়কে অটোরিকশা দূর্ঘটনায় অর্ধ্বশতাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছেনা হাইওয়ে পুলিশের।
সবশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর ব্রিজের ঢালে উল্টো পথে আসা ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-ছেলে সহ তিনজন নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন- গাইবান্ধার সুনামগঞ্জ থানার আশরাফুল আলমের স্ত্রী কাকলি (৩৫), ছেলে আরিয়ান আহম্মেদ রাফি (৫) ও রংপুরের পীরগাছা থানার আব্দুল ওহাবের ছেলে অটোরিকশা চালক আনিসুর রহমান (২৩)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছিল, মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে দ্রুতগতিতে হিমালয় পরিবহনের একটি বাস আসছিল। একই সময় উল্টো পথে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাচ্ছিল। এ সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা চালকসহ অটোরিকশায় থাকা মা- ছেলের মৃত্যু হয়।
এদিকে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে দায়ী করছেন পথচারীরা। অনেকেই বলছেন পুলিশের রহস্যজনক উদাসিনতা ও জনসচেতনার অভাবে মহাসড়কে অটোরিকশার দৌরাত্ব্য বেড়েছে।
সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, সানাড়পাড়, মৌচাক, চিটাগাং রোড শিমরাইল মোড় ও কাঁচপুর সেতুর উভয়পাশে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়ক জুড়ে অসংখ্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করছে। বেশির ভাগই আবার চলছে উল্টো পথে।
অটো চালকরা ঝুঁকিপুর্ণভাবে যাত্রীদের পরিবহন করছে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও নারী-পুরুষ-শিশু যাত্রীরা নিরুপায়।
ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী একটি বাসের চালক জয়নাল বলেন, সরকার ও উচ্চ আদালত মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করলেও এই এলাকায় কোনো প্রশাসন আছে বলে মনে হয় না। এসব ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার কারণে আমাদের ধীরগতিতে চলতে হয়।
মহাসড়কে বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য এই অটোরিকশাকে দায়ী করে হানিফ পরিবহনের চালক লিটন বলেন, মহাসড়কে বড় বড় যানবাহন চলাচল করে কিন্তু এই অটোরিকশা হঠাৎ হঠাৎ বড় যানবাহনের সামনে এসে পড়লে দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক রেদোয়ান বলেন, আমি একদিন কাজ থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি অটোরিকশা আমার গায়ের উপরে উঠে যায় যার ফলে আমার হাত ভেঙে যায় এবং আমি প্রায় তিন মাস চিকিৎসা দিন ছিলাম।
সানাড়পাড় এলাকার বাসিন্দা জুনায়েদ বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট এসব যানবাহনের কারণে আমরা সব সময় সড়ক দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সখ্য করেই গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে এগুলো চলাচল করছে।
রমজান মিয়া নামের একজন অটোরিকশাচালক বলেন, মাঝে মধ্যে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। কিছু কিছু রিকশা ডাম্পিং করে। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে আবার রিকশা চালাই।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মহাসড়কে উল্টো পথে ব্যাটারি চালিত অটো রিকসার চলাচল বন্ধ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়। এতে প্রাণহানী ঘটনার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সহিত সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিৎ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ টিআই নাইম বলেন, কোনো অনিয়মের সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ জড়িত নেই। প্রতিদিনই এসব অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ১০/১৫ টি আটক করে জরিমানা ও রেকারিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মহাসড়কে এদের চলাচল অনেক কমে আসছে। আশা করি মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে।