লন্ডনে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান। দলটির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমান ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান তার জ্যেষ্ঠ সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আরো পড়ুন:

বিমান বাংলাদেশে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফিরবেন খালেদা জিয়া

দেশ রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় অতিক্রম করছে: ফখরুল

ঢাকায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি রাজকীয় বহরের বিশেষ বিমান দিয়েছিলেন। ওই বিশেষ বিমানে (বিশেষ ধরনের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে তিনি ৮ জানুয়ারি লন্ডনে যান। সেই বিশেষ বিমানেই আবার লন্ডন থেকে মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি (ম্যাডাম) মঙ্গলবার কাতার রয়েল অ্যাম্বুলেন্সের এয়ার ক্রাফটে সকাল ১০টায় ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছাবেন। আমরা আশা করছি যে, সময়মতোই ঢাকায় পৌঁছাবেন।”

এদিকে, লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরার পর বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে যাওয়া দলের নেতাকর্মীদের ফুটপাত থেকে সড়কে না নামার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৫ মে) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এই অনুরোধ জানান তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘কাতারের আমিরের পাঠানো র‍য়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার সকালে (সাড়ে ১০টায়) বেগম জিয়া দেশে এসে নামবেন। আবার সকালে এসএসসি পরীক্ষার জন্য বের হবেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় দলের নেতাকর্মীদের বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত ফুটপাত থেকে সড়কে না নামার আমি আমি অনুরোধ করছি। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও কেউ যেন সড়কে না নামতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আমি অনুরোধ করছি।’

ঢাকা/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ত র ক রহম ন অন র ধ

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ