মেট গালায় বেবি বাম্ব নিয়ে হাটলেন রিহানা ও কিয়ারা
Published: 6th, May 2025 GMT
এ বারের মেট গালায় বেবি বাম্প নিয়ে হাঁটলেন এই দুই আত্মবিশ্বাসী তারকা। তাঁদের দিকেই ছিল সবার নজর। মেট গালাতেই প্রথমবার বেবি বাম্প প্রকাশ্যে আনলেন কিয়ারা।
চোখ ফেরানো যায় না। কাঁধ খোলা কালো গাউনে ভারতীয় সংস্কৃতির সোনালি ছোঁয়া রেখে মেট গালার গালিচায় হাঁটলেন বলিউড অভিনেত্রী কিয়ারা আদবানি। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বামী-অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও তিনি ইনস্টাগ্রামে বাবা-মা হওয়ার সুখবরটি দিয়েছিলেন। এ বারের মেট গালায় প্রথম বারের জন্য হাঁটলেন কিয়ারা। বেবি বাম্প দেখা গিয়েছে তার। বাম্পে হাত রেখে ক্যামেরার সামনে পোজ় দিয়েছেন কিয়ারা।
কেবল কিয়ারা নন, আরও এক অন্তঃসত্ত্বা তারকা মেট গালার নীল কার্পেট উজ্জ্বল করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন গায়িকা ও অভিনেত্রী রিহানা। মাথা থেকে পা পর্যন্ত কালো পোশাকে দেখা মেলে রিহানার। কালো গাউনের সঙ্গে কালো কোট ও মাথায় গোলাকার কালো চুপি পরেছিলেন তিনি। তৃতীয়বারের জন্য মা হতে চলেছেন রিহানা। সে খবর মাস খানেক আগেই প্রকাশ্যে আসে। এর আগেও মেট গালায় হাঁটেন রিহানা। যদিও অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই প্রথম।
এ বারের মেট গালার থিম ছিল ‘সুপারফাইন: টেলর্ড ফর ইউ’। সেই থিম মেনেই পোশাক তৈরি করেছিলেন ডিজ়াইনাররা। বলিউড অভিনেত্রীদের মধ্যে কিয়ারা চতুর্থজন তিনি মেট গালায় হাঁটলেন। ভারতীয় ফ্যাশন ডিজ়াইনার গৌরব গুপ্তর তৈরি করা পোশাকে হাঁটলেন তিনি। প্রথম বার প্রকাশ্যে আনেন তাঁর বেবি বাম্পকেও।
মেট গালায় হাঁটার পর তাঁর স্বপ্নপূরণ সম্পর্কে সংসাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কিয়ারা, ‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মেট গালায় হাঁটা আমার মতো একজন শিল্পীর কাছে খুব স্পেশ্যাল মুহূর্ত। আমার স্টাইলিস্ট অনৈতাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গৌরব খুবই সুন্দর ভাবে পোশাকটি তৈরি করেছেন। ‘টেলর্ড ফর ইউ’ থিমকে মাথায় রেখে ‘ব্রেভহার্ট’ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পোশাক পরিকল্পনা করেন গৌরব। এই পোশাক আন্দ্রে লিয়ন ট্যালিকে সম্মান জানিয়ে তৈরি হয়েছে। পোশাকটি শক্তি, উদ্দেশ্য ও ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরে।’ এ দিন নিউড মেকআপে দেখা যায় কিয়ারাকে। চুল ছিল খোলা। কার্ল করা। খুবই অল্প সোনালি গয়না পরেছিলেন অভিনেত্রী।
এর আগে মেট গালায় হেঁটেছেন আলিয়া ভাট, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও দীপিকা পাড়ুকোন। কিয়ারার মতো মেট গালায় ডেবিউ করলেন শাহরুখ খানও। তিনি পরেছিলেন সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজ়াইন করা পোশাক। ৫ মে নিউ ইয়র্কের দ্য মেট্রোপলিটান মিউজ়িয়াম অফ আর্টে আয়োজিত হয় মেট গালা। সিনেমাপ্রেমী ও ফ্যাশন দুনিয়ার নজর ছিল সেই দিকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক য় র আদভ ন ব ব বম প
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।
জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।
পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।
মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।