জনপ্রশাসন এবং মাঠ প্রশাসনের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা কর্মচারীদের অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন না করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।

মঙ্গলবার (৬ মে) অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ও বগুড়ার জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব অনুযায়ী জনপ্রশাসন এবং মাঠ প্রশাসনের নন-ক্যাডার কর্মচারীদের অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন বিষয়ে পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ৩০ এপ্রিল অফিস আদেশ অনুযায়ী যুগ্ম সচিবের (বিধি-১) নেতৃত্বে আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে।  এটি খুবই উদ্বেগ ও চিন্তার বিষয়। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগের কারণে সচিবালয়ে কর্মরত সর্বস্তরের কর্মচারীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া, হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য বর্তমান সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কাজের প্রকৃতি, ব্যাপ্তি ও পরিধির সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের কাজের কোনো মিল নেই। এমনকি মন্ত্রণালয়ের সাংগঠনিক কাঠামোর সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের সাংগঠনিক কাঠামোর মিল নেই। শুধু তাই নয়, বেতন কাঠামোর কোনো মিল নেই। মাঠ পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং হলে প্রশাসনিক ক্ষমতার বলয়ে তার অধীনে মাঠ প্রশাসনের জনবলও মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে করে নিয়ে আসবে। বদলি ও প্রশাসনিক হয়রানি বাড়বে। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সুপ্রিম কোর্টের অধীন ব্যণিজ্যিক ব্যাংক ও নিম্ন আদালতের এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা নেই। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় এনে এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন বন্ধ করা জরুরি। অবিলম্বে বন্ধ করা না হলে সচিবালয়ে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক মো.

নজরুল ইসলাম বলেন, “এটি করা হলে সচিবালয়ে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ কর্মচারীদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য এটি একটি কূটকৌশল হতে পারে।”

তিনি এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র প রণয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু

মাধ্যমিক স্তরের চলমান শিক্ষাক্রম আরও যুগোপযোগী করে আগামী বছর থেকে নতুনভাবে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান হবে। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। 

এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে– এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রম অনুসারে অন্য শ্রেণিতে তা চালু করা হবে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড়ো পরিবর্তন আনা হয়। সে বারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।

সেই রূপরেখা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।

অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে, সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু
  • পানি আইন: আগার আলাপ ও গোড়ার গলদ