রূপগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মা ও দুই ছেলেকে কুপিয়ে জখম ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার তারাব পৌরসভার মোগড়াকুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– নাসিমা আক্তার (৫৬), তাঁর ছেলে নাঈম ইসলাম (২৭) ও শাহীন আলম (২৯)। নাসিমা ওই এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী নাঈম জানান, একই এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে জামাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে মঙ্গলবার সকালে প্রতিপক্ষ তাদের ঘরে ঢুকে গালাগাল শুরু করে। প্রতিবাদ করলে জামাল, তাঁর স্ত্রী শিরীন আক্তার, আনোয়ার ও তাঁর ছেলেসহ ৪-৫ জন চাপাতি দিয়ে নাঈমকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে গেলে তারা তাঁর বড় ভাই শাহীনকে কুপিয়ে জখম ও মা নাসিমাকে পিটিয়ে জখম করে। পরে ৮০ হাজার টাকা মূল্যের গলার চেইন ও নগদ ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
অভিযুক্ত জামাল হোসেন জানান, তিনি কাউকে আহত করেননি। এটি তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। 
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, অভিযোগ পেয়েছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল টপ ট

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণে দুই দিনের বৈঠকেও ঐকমত্য হয়নি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে গত দুই দিন বৈঠক হলেও মুদ্রা বিনিময় হার নমনীয় করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে সরকার মনে করছে, ঐকমত্যে পৌঁছানোর সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি, আরও আলোচনা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ কথা জানা গেছে।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার মান কত হবে—তা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার শর্ত পূরণের ওপর নির্ভর করছে আইএমএফের চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ পাবে কি না। ঋণের কিস্তি ও শর্তের বিষয়ে সর্বশেষ গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার ভার্চ্যুয়ালি আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশা করছি, আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিটি চালু থাকবে। কিছু কারিগরি দিক নিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা চলছে। আরও আলোচনার দরকার পড়বে। দেখা যাক।’

আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত তিনটি কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। বাকি ঋণের দুই কিস্তি ও শর্ত নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে প্রায় এক মাস ধরে দর-কষাকষি চলছে।

ইতিমধ্যে পাওয়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির পর্যালোচনা করতে গত ৬ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত আইএমএফের একটি মিশন ঢাকা ঘুরে গেছে। ওই সময় ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। আলোচনা গড়ায় পরে ওয়াশিংটনেও। সেখানে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকের এক ফাঁকে ঋণের কিস্তি ও শর্তের বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়। সেখানেও কোনো সমঝোতা হয়নি।

এরপরই বাংলাদেশ ও আইএমএফ গত দুদিন ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক করেছে। বৈঠক শেষে আগের দিনের মতো গতকালও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আলোচনার পথ শেষ হয়ে যায়নি। চলতি মাসে আবার আলোচনা হতে পারে।

সোমবারের বৈঠকের হালনাগাদ বিষয়ে জানতে চেয়ে ওই দিন প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আইএমএফকে ই–মেইল করা হয়। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় ই–মেইলের জবাব দেয় আইএমএফ। এতে বলা হয়, ‘ঢাকার মিশন শেষে ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের আলোচনা অব্যাহত ছিল। ঋণ কর্মসূচির আওতায় সংস্কারকাজে গতি আনতে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক চলছে।’

দুই দিনের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের দিক থেকে বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে বিনিময় হার নমনীয়, অর্থাৎ বাজারভিত্তিক হলে মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা আছে। তখন বেড়ে যেতে পারে ডলারের দাম, যার প্রভাবে বেড়ে যেতে পারে আমদানি পণ্যের দাম। এ কারণে বেড়ে যেতে পারে আবার সার্বিক মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতি এখনো ৯ শতাংশের বেশি আছে।

গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করেন ঋণ কর্মসূচিটি বজায় থাকা জরুরি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচিটি না থাকলে অর্থনীতি পরিচালনায় বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ