জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুদ্ধের পথ পরিহার করে ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বেোচ্চ সামরিক সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। 

৭ মে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক এক বিবৃতিতে এই তথ্য তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তথ্য বিশ্বগণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া এলো। 

দুজারিক বলেছেন, “নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের চালানো সামরিক অভিযান নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব।”

আরো পড়ুন:

ভারতের হামলাকে ‘কাপুরুষের কাজ’ বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: শিশুসহ ৭ জন নিহতের দাবি পাকিস্তানের

মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, “তিনি (গুতেরেস) উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সামরিক সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্ব বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি সামরিক সংঘাত সহ্য করতে পারবে না।”

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এটা দুঃখজনক।” আশাবাদ্য ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শিগগির এর অবসান হোক।

এদিকে গভীর রাতে পাকিস্তানে ভারতের হামলাকে ‘কাপুরুষের কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে এর কড়া জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বিশ্বাসঘাতক শত্রু পাকিস্তানের ভেতরে পাঁচটি স্থানে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে। এই নিন্দনীয় আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে।”

“অপ্ররোচিত ভারতীয় হামলার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে— একটি কঠিন জবাব দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে,” যোগ করেন শাহবাজ শরিফ।

তিনি আরো বলেন, “সমগ্র জাতি তার সশস্ত্র বাহিনীর পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে এবং আমাদের মনোবল ও সংকল্প অটুট রয়েছে। আমাদের প্রার্থনা ও সমর্থন পাকিস্তানের সাহসী সেনা ও অফিসারদের সঙ্গে আছে।”

“পাকিস্তানের জনগণ ও তার বাহিনী আমাদের শক্তি ও দৃঢ়তা নিয়ে যেকোনো হুমকির মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত,” বলেন শাহবাজ শরিফ।

তিনি বলেন, “শত্রুকে তার অসৎ উদ্দেশ্য কখনোই বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।”

শাহবাজ শরিফ তার বিবৃতিতে পাঁচটি স্থানে ভারতের হামলার কথা বললেও নরেন্দ্র মোদি সরকার এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, হামলা হয়েছে ৯টি স্থানে। 

আইএসপিআর কর্মকর্তা আহমেদ শরিফ বলেছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানা স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি মসজিদ রয়েছে। 

৭ মে পাকিস্তানের ভেতরে ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে এই হামলা চালায় ভারতের সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে ভারত বলছে, পহেলাগামে হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। কোনো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি।

বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও হামলা পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয় ইসলামাবাদ। এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে পাকিস্তান বরাবরই বলে আসছে, পহেলগাম হামলার সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। উপরন্তু, ভারতের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তা দেখানোর চ্যালেঞ্জ দিয়েছে তারা।

সেই থেকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা করল ভারত। এখন পাকিস্তান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় বা জবাব দেয়, তারপর ওপর নির্ভর করছে বাকিটা।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক ব ব ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ব সংগীত দিবস আজ, কী থাকছে বাংলাদেশের আয়োজনে

আজ ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস। এই দিন ঘিরে নানান দেশে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশেও সংক্ষিপ্ত পরিসরে দিনটি উদযাপিত হয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। 

সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর আগে হবে র‌্যালি। শিল্পকলা একাডেমির সংগীত বিভাগ অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধান করছে। 

সংগীতের নানান ধারা উপস্থাপন করার মানসে ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’ কাজ করে আসছে। এ সংগঠনের উদ্যোগে বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বিকেল সাড়ে ৫টায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন নাট্যব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ। 
‘সৃষ্টি বিশ্বময়’-এর সাধারণ সম্পাদক অলক দাশগুপ্ত বলেন, “বিশ্ব সংগীত দিবসকে সবার মাঝে তুলে ধরতেই এ আয়োজন। আলোচনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকছে। আশা করছি সবার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি সফল হবে।”

১৯৮২ সালে ফ্রান্সে ‘ফেত দ্য লা মিউজিক’ বা ‘মেক মিউজিক ডে’ নামে একটি দিনের উদযাপন শুরু করা হয়। ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ১৯৮১ সালে এ বিষয়ে প্রথম চিন্তা করেন। 

ঢাকা/রাহাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ