পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ দেশটির কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। মধ্যরাতে পাকিস্তানের মোট নয়টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে বলে ভারতের সরকার দাবি করেছে। অন্যদিকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। পাকিস্তান আরও হামলা চালাবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় ভারত-শাসিত কাশ্মীরের প্রধান বিমানবন্দরসহ উত্তর ভারতের বহু বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ভারতীয় যাত্রীদের মধ্যেও।

বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যম দুটি বলছে, ভারতের কাশ্মিরের শ্রীনগর শহরের প্রধান বিমানবন্দরটি সাময়িকভাবে সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।

এছাড়া ভারতের বৃহত্তম বাজেট এয়ারলাইন ইন্ডিগো যাত্রীদের সতর্ক করে জানিয়েছে, কাশ্মীর ও উত্তর ভারতের একাধিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাদের মতে, আকাশসীমার পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

যেসব বিমানবন্দরে এই প্রভাব পড়ছে, তার মধ্যে রয়েছে: শ্রীনগর ও লেহ (কাশ্মীর অঞ্চলে), পাঞ্জাবের অমৃতসর, চণ্ডীগড়, রাজস্থানের বিকানের, ধর্মশালা (উত্তর ভারতে) ও হিন্দন (দিল্লি)।

ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি প্রধান বিমান সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে এবং যাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলেছে।

এয়ারস্পেসে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাত্রীদেরকে সর্বশেষ আপডেটের জন্য সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, নিরাপত্তাজনিত কোনও বড় হুমকি নাকি সামরিক কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ও সীমান্ত অঞ্চলে সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এসব বিমানবন্দর বন্ধের বিষয়টি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

এদিকে ভারতের মিসাইল হামলার জবাবে দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে এ তথ্য জানান তিনি। এছাড়া কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটকের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ