বাংলাদেশ স্বরাজ পার্টি (বিএসপি) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানানো হয়। এ সময় দলটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আহমদসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের সিলেট বিভাগের সভাপতি মাসুদুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বরাজ পার্টি শুধুমা আরেকটি নতুন দল নয়, এটি একটি আধুনিক, সময়োপযোগী ও মূল্যবোধভিত্তিক রাজনৈতিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে দেশের রাজনীতি পুরোনো ও জরাজীর্ণ কাঠামোর বেড়াজালে আবদ্ধ। প্রচলিত দলগুলোর ব্যর্থতার কারণে দেশ রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা ও আদর্শহীনতায় ভুগছে।

মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ‘মানুষ অনেক সময় তার স্বপ্নের চেয়েও বড় হয়। আমাদের স্বপ্ন সীমিত হলেও দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত, লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। আমরা চাই, বাংলাদেশ হোক পৃথিবীর বুকে অনন্য এক রাষ্ট্র।’

দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক আদর্শ ও ভবিষ্যতের জন্য একটি রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যেই আমরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নতুন এই রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই, যাতে একটি উন্নত, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সিলেট জেলার সভাপতি হারুন রাজা চৌধুরী, সিলেট বিভাগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আজম, সিলেট জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র ধর, সহসাংগঠনিক সম্পাদক দুধু মিয়া, সদস্য মো.

বশির মিয়া, আরজু মিয়া, ফুরাই চন্দ্র দেবনাথ, সাজ্জাদ আলী, ফারুক মিয়া, মিনা বেগম চৌধুরী, মো. সানুর মিয়া, আনহার আলী প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ