পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের ব্যাপক বিমান হামলার জবাবে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর তীব্র গোলাবর্ষণ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে ৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৩০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। 

এর আগে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। 

আরো পড়ুন:

‘সাদা পতাকা উত্তোলন করেছে ভারত’

ভারতের অত্যাধুনিক রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি পাকিস্তানের

এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পুঞ্চ এবং রাজৌরিতে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর সামনের গ্রামগুলোতে ভারী মর্টার শেলিং করেছে।

ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, পুঞ্চের কৃষ্ণা ঘাটি, শাহপুর এবং মানকোট, রাজৌরি জেলার লাম, মাঞ্জাকোট এবং গম্বীর ব্রাহ্মণা থেকে গোলাগুলি চালানোর খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সেনা পাল্টা জবাব দিয়েছে। 

এদিকে মঙ্গলবার রাতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে নারী-শিশুসহ আটজন নিহত হওয়ার দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ