ভারত গতকাল মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের ছয় শহরে হামলা চালিয়েছে। পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার ভোর থেকে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহু উড়োজাহাজের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ভারত–পাকিস্তান সংঘাত পরিস্থিতিতে উড়ানসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর পক্ষে জানানো হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, ইন্ডিগো, স্পাইসজেটের মতো সংস্থাগুলো ‘যাত্রীর সুবিধার্থে’ এসব বিবৃতি জারি করেছে। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে আজ বুধবার কোনো উড়োজাহাজ উড়বে না। কোনো উড়োজাহাজ নামবেও না।

আজ সকালেই এয়ার ইন্ডিয়া এক্সে বিবৃতি দিয়ে জানায়, জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, যোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড়গামী সব উড়োজাহাজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হচ্ছে। কারণ হিসেবে ‘বিদ্যমান পরিস্থিতি’র কথা বলা হয়েছে। অমৃতসরগামী দুটি আন্তর্জাতিক বিমান দিল্লিতে নামানো হয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসও আলাদা বিবৃতি জারি করে বহু উড়োজাহাজ বন্ধের কথা জানিয়ে যাত্রীদের বলেছে, বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে তাঁরা যেন উড়ান পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নেন।

একইভাবে স্পাইসজেটও উড়ান বাতিলের কথা জানিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, অমৃতসর, জম্মু, শ্রীনগর, লেহ ও ধর্মশালা বিমানবন্দর বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হবে।

ইন্ডিগো সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর ভারতের শ্রীনগর, লেহ, ধর্মশালা, শ্রীনগর, জম্মু, চণ্ডীগড় থেকে আসা–যাওয়া করে—এমন সব উড়োজাহাজ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা হচ্ছে। রাজস্থানের যোধপুর ও বিকানিরেও আপাতত তাদের কোনো বিমান চলাচল করবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত শ র নগর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ