হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ককে বহিষ্কার
Published: 7th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হবিগঞ্জ জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক ওরফে সাকিবকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড, সহিংসতা, মামলা–বাণিজ্য এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি আদর্শিক ছাত্রসংগঠন। এনামুল হক দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে চলছিলেন। তিনি সংগঠনের পদ–পদবি ব্যবহার করে মামলা–বাণিজ্যে যুক্ত ছিলেন এবং সহিংস কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। এসব কারণে তাঁকে সংগঠনের সব ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার ও সদস্যসচিব মাহদী হাসানের যৌথ নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জেলা মুখপাত্র রাশেদা বেগম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ বিষয়ে আজ বুধবার প্রথম আলোকে সংগঠনের হবিগঞ্জ জেলা শাখার সদস্যসচিব মাহদী হাসান বলেন, ‘আমরা নীতি-আদর্শবিরোধী ও দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিকে সংগঠনে জায়গা দিই না। এনামুল আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, যে অভিযোগ এনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা সঠিক নয়। এ ছাড়া জেলা কমিটির নেতারারা অপর জেলা নেতাকে বহিষ্কার করতে পারেন না। সেটি সংগঠনপরিপন্থী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)