টানা ছয় ঘণ্টার অস্ত্রোপচার, কেমন আছেন পবনদীপ
Published: 7th, May 2025 GMT
গত সোমবার ভোরে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ গায়ক পবনদীপ রাজন। ভারতের উত্তর প্রদেশের আমরোহা জেলায় দিল্লি জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গায়কের গাড়ি। তাঁর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে একটি মালবাহী ট্রাকের। পথচারীরা তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেন এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিল্লি এনসিআরের ফরটিস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় হাড় ভেঙেছে তাঁর, লেগেছে মাথায় চোট। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার।
আরও পড়ুনইন্ডিয়ান আইডল হওয়ার আগেই পবনদীপের ভক্ত ছিলেন সালমান খান১৭ আগস্ট ২০২১ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকেরা পবনদীপকে তিন থেকে চার দিন পর্যবেক্ষণে রাখবেন। অবস্থার উন্নতি হলে তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে।
পবনদীপের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘পবনদীপের অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে, তবে আরও একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। তিনি এখন সাড়া দিচ্ছেন এবং ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সোমবারটা পবনদীপ ও তাঁর পরিবারের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। সারা দিন তিনি তীব্র যন্ত্রণা ও অজ্ঞান থাকার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁকে অস্ত্রোপচারের জন্য নেওয়া হয় এবং ছয় ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারের পর তাঁর কিছু বড় আঘাতের চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে আছেন। কয়েক দিন বিশ্রামের পর আবার অস্ত্রোপচার করা হবে।’
জানা গেছে, গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েন পবনদীপের গাড়িচালক। তাতেই ঘটে এ দুর্ঘটনা। তাঁদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয় ট্রাকে। কেবল পবনদীপ নন, তাঁর সঙ্গে গাড়িতে থাকা অন্যরাও আহত হয়েছেন। ‘ইন্ডিয়ান আইডল’খ্যাত এই গায়ক তাঁর বাড়ি থেকে আহমেদাবাদে একটি অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ‘ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ১২’ জিতে খ্যাতি অর্জন করেন পবনদীপ রাজন। এর আগে ২০১৫ সালে ‘দ্য ভয়েস ইন্ডিয়া’ রিয়েলিটি শোতেও বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
এমন করুণ দশায় থাকবে উপজেলাটি?
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এক মাস ধরে অস্বাভাবিক জলাবদ্ধতার শিকার। বাড়ির চারপাশে হাঁটুপানি থেকে কোমরপানি, গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে আছে, চলাচলের একমাত্র উপায় এখন ডিঙিনৌকা। এটি শুধু বর্ষার স্বাভাবিক চিত্র নয়, বরং মানবসৃষ্ট এক ভয়াবহ দুর্ভোগের চরম বাস্তবতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ ও পানিনিষ্কাশনের খাল দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও চৌমুহনী পৌরসভার বেশির ভাগ মানুষ এখন ভুক্তভোগী। এই জলাবদ্ধতা শুধু যাতায়াতের দুর্ভোগই সৃষ্টি করছে না, এর প্রভাব পড়ছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে। শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, ফলে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি জমে থাকায় শৌচাগার ব্যবহার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এটি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে ও তাদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দিচ্ছে।
আর্থিক সংকটে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। রিকশাচালকের মতো দিনমজুরেরা সারা দিন রিকশা চালিয়েও ১০০ টাকা আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা নেই। সামগ্রিকভাবে এই জলাবদ্ধতা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর এক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান স্বীকার করেছেন যে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের খালগুলো দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজেদের উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও সরকারি পর্যায়ে চৌমুহনীর বড় খাল পরিষ্কার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে, কিন্তু মূল সমস্যাটি রয়ে গেছে তৃণমূল পর্যায়ে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জরুরি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। প্রথমত, প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। শুধু শহরের বড় খাল নয়, বরং গ্রাম ও ইউনিয়নের ছোট খালগুলোও দখলমুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোরতা অপরিহার্য। দ্বিতীয়ত, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও বসতি স্থাপন বন্ধ করতে হবে। কোনো ধরনের অনুমোদনের বাইরে যেন কেউ বাড়িঘর নির্মাণ করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখা জরুরি। তৃতীয়ত, জনগণকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের দুর্ভোগের কারণ হিসেবে অন্যের দোষারোপ না করে সম্মিলিতভাবে খাল দখলমুক্ত করার আন্দোলনে শামিল হতে হবে।
বেগমগঞ্জের এই জলাবদ্ধতা একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়, প্রকৃতির ওপর মানুষের লাগাতার নিপীড়ন বন্ধ না হলে এমন দুর্ভোগ আরও বাড়বে। শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়, বরং জনগণের সচেতনতা, স্থানীয় নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও প্রশাসনের কঠোরতাই পারে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে।