মুন্সিগঞ্জে ছাদ উড়ে যাওয়া সেই বাসের চালক গ্রেপ্তার
Published: 7th, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাদ উড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসটির চালক মো. শহিদুল শেখকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাব।
শহিদুল শেখ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গয়লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসচালক ছিলেন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে বাসটি ছাড়ে। রাত পৌনে ৯টার দিকে বাসটি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে ওঠার পর বাসটি একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের ছাদ সামনের দিক থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীদের ভাষ্য, দুর্ঘটনার পরও চালক বাসটি না থামিয়ে দ্রুতগতিতে চালিয়ে যেতে থাকেন। এক কিলোমিটার দূরে সমষপুর এলাকায় পৌঁছালে বাসের ছাদটি উড়ে পড়ে যায় এবং একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয়। এরপর চালক বাসটি আরও পাঁচ কিলোমিটার দূরে লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার সামনে ফেলে পালিয়ে যান। বাসে থাকা যাত্রীরা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করলেও চালক কর্ণপাত করেননি। পরে স্থানীয় লোকজন বাসটি ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এ ঘটনায় পরদিন হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আতিউর রহমান বাদী হয়ে শহিদুল শেখকে আসামি করে সড়ক পরিবহন আইনে শ্রীনগর থানায় মামলা করেন।
র্যাব-১০ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাসচালককে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব নজরদারি বৃদ্ধি করে। গতকাল রাতে ধলেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকা থেকে শহিদুল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাঁকে আজ বুধবার হাঁসাড়া হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র নগর
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)