মঙ্গলবার ভোর রাতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অবস্থিত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করলেন ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের সচিব বিক্রম মিশ্র। 

আজ বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে একটি ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে ২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে আক্রমণ থেকে শুরু করে ২০০২ সালে অক্ষরধাম মন্দির হামলা, ২০০৮ মুম্বাই হামলা, ২০১৬ উরি হামলা, ২০১৯ পুলবামা হামলা ও সম্প্রতি ২০২৫ সালে পেহেলগাও হামলায় তথ্য তুলে ধরা হয়। এসব হামলায় এখনো পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩৫০ এর উপর বেশি ভারতীয় মারা গেছেন বলে দাবি করা হয়। 

আরো পড়ুন:

‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে ভারত-শাসিত কাশ্মীর

পাকিস্তানে ভারতের হামলা: তারকারা কী বলছেন?

পররাষ্ট্র দপ্তরের সচিব বিক্রম মিশ্র জানান, আগামী দিনেও সন্ত্রাসবাদীরা ভারতে এরকম হামলা চালাবেন বলে তথ্য রয়েছে। তাই এই সন্ত্রাসবাদীদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর পরিকল্পনা করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বিক্রম মিশ্র আরো জানান, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নির্দিষ্টভাবে যেসব জঙ্গি ঘাঁটিগুলো ছিল তার ওপর বিশেষ নজরদারি চালানো হয় ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগের তরফ থেকে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ৭ তারিখ রাত ০১:০৫ থেকে ০১:৩০ পর্যন্ত ২৫ মিনিট বিমান হামলা চালানো হয়। যে সব জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে তা নির্দিষ্টভাবে লস্কার-ই-তৈয়বা, জয়েস-ই-মোহাম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠন এবং সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবেই চিহ্নিত ছিল। ভারতীয় সেনা অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে এবং নিখুঁতভাবে নির্দিষ্টভাবে শুধুমাত্র সেই সমস্ত স্থানেই হামলা চালিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে আরো দাবি করা হয়, এই বিমান হামলার ফলে পাকিস্তানের কোনো সামরিক ক্ষেত্র অথবা সেনা ছাউনি অথবা সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়নি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

- ভারতের হামলায় পাকিস্তানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছে ৫৭ জন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।

‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তারা এসব হামলা চালিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তায়েবা (এলইটি) ও জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা বলেছে, পাঞ্জাবের ভাওয়ালপুরে জেইএমের ঘাঁটি এবং একই প্রদেশের মুরিদকে শহরে এলইটি’র আস্তানাসহ নয়টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তারা।

অবশ্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর তথ্য মতে, পাকিস্তানের ছয় স্থান—পাঞ্জাবের শিয়ালকোট, ভাওয়ালপুর ও মুরিদকে এবং পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফ্ফারাবাদ, বাগ ও কোটলিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানায়, দেশটির মাটিতে আক্রমণে অংশ নেওয়ার পরই ওই পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার মাধ্যমে ভারতের হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তবে পাকিস্তানের এ দাবির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি।

অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ১৫ বেসামরিক ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ