বিমানবন্দর উন্নয়নে দুর্নীতি: শেখ হাসিনাসহ ৩ জনকে দুদকে তলব
Published: 7th, May 2025 GMT
বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সাবেক সচিব মোকাম্মেল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার রাজধানীর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
৫ মে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তাঁদের ৮ মে হাজির হতে বলা হয়েছে। শেখ হাসিনার চিঠি পাঠানো হয়েছে তাঁর ধানমন্ডি ও টুঙ্গিপাড়ার ঠিকানায়। অন্যদের চিঠিও নিজ নিজ ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনটি বিমানবন্দরের চার প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করা হয়েছে।
এ অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপপরিচালক মো.
তদন্তের আওতায় আরও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মহিবুল হক, যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেবিচকের চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানসহ আটজন সাবেক কর্মকর্তা।
মাহবুব আলী ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন এবং মোকাম্মেল হক পলাতক বলে জানা গেছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে তারিক আহমেদ সিদ্দিক শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও হত্যা ও গুমের একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনিও পলাতক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা, ৭৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও বর্তমান প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সাড়ে সাত হাজার টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বায়েজিদুর রহমান খান।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৭ জুন থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নগর ভবনসহ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিল প্রস্তুত, মাস্টাররোলে কর্মী নিয়োগ, ভুয়া সভা, অনুদান, আপ্যায়ন, ইজারা খাতসহ বহু খাতে কোনো কাজ না করেই বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এ অর্থ সরকারি উন্নয়ন তহবিল ও সিটি করপোরেশনের রাজস্ব খাত থেকে কৌশলে তুলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে রাজস্ব তহবিল থেকে ১৩৬ কোটি টাকা, টেন্ডার বাবদ ১২৮ কোটি টাকা, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ৯ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২ কোটি টাকা, উন্নয়ন তহবিল থেকে রাজস্ব তহবিলে স্থানান্তরের নামে ৯৯৯ কোটি টাকা, রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে ৭২ কোটি টাকা, মাস্টাররোলকর্মী ও করোনা খাতে ভুয়া বিলের মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া হাটবাজার ইজারা ও ট্রাফিক নিয়োগ খাতেও অসংখ্য অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রিমিয়ার ব্যাংকের কোনাবাড়ি শাখায় ভুয়া হিসাব খুলে ২ দশমিক ৬ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়, জাতীয় নির্বাচনের আগেও চেকের মাধ্যমে ১৩ কোটি টাকা তোলা হয়, মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন দেখিয়ে আরও কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তদন্ত করে অপরাধ–সংশ্লিষ্ট সব প্রমাণ ও তথ্য যাচাই শেষে এজাহার তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ২৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার কাজ দেখিয়ে বিল উত্তোলনের তথ্য মিলেছে, যা আদতে সম্পূর্ণ ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে।
গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বায়েজিদুর রহমান খান বলেন, মামলার তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।