বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ভাই–বোনের বিরোধ, আজও মাঠে ভাইয়ের সমর্থকেরা
Published: 8th, November 2025 GMT
নাটোর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নকে ঘিরে বিএনপির প্রয়াত নেতা ফজলুল রহমানের (পটল) দুই সন্তান—ফারজানা শারমিন (পুতুল) ও ইয়াছির আরশাদের (রাজন) মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ৩ নভেম্বর ফারজানা শারমিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকেই এ বিরোধ প্রকাশ্যে আসে।
ফারজানা শারমিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে ইয়াছির আরশাদের সমর্থকেরা আজ শনিবার বিকেলে লালপুরের শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
সমাবেশে ওয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম বলেন, ‘ফজলুর রহমান লালপুর-বাগাতিপাড়ার প্রাণপুরুষ ছিলেন। তাঁর সুযোগ্য ছেলে চিকিৎসক ইয়াছির আরশাদ বাবার জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তাই আমরা তাঁকেই এমপি হিসেবে দেখতে চাই। না হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।’
দুয়ারিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ইয়াছির আরশাদের জনপ্রিয়তার তুলনা হয় না। তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে আমরা এমপি হিসেবে ভাবতেই পারি না। আমরা অবিলম্বে মনোনয়ন পরিবর্তন চাই।’ সমাবেশে ইয়াছির আরশাদ উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনেককে সেখানে দেখা গেছে।
মুঠোফোনে প্রথম আলোকে ইয়াছির আরশাদ বলেন, ‘জনমত উপেক্ষা করে কোনো মত চাপিয়ে দেওয়া হলে দলই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমি আশা করব, দল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। তৃণমূলের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দেবে। আমি লালপুরে জন্মেছি, লালপুরেই আমার সংসার। লালপুর-বাগাতিপাড়ার মানুষের সঙ্গে মিলে-মিশে থাকতে চাই।’
অন্যদিকে ফারজানা শারমিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ভাই–বোনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। একটি কুচক্রী মহল আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে। সাত দিনের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। জনপ্রিয়তা যাচাই করেই দল প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এলাকার মানুষ বিপুল ভোটে আমাকে বিজয়ী করবেন।’
৩ নভেম্বর ফারজানা শারমিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে ইয়াছির আরশাদের সমর্থক ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী তাইফুল ইসলামের (টিপু) অনুসারীরা ফারজানার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে রেলপথ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ফারজানা শারমিন আজ শনিবার বিকেলে বাগাতিপাড়া স্কুল মাঠে জনসভা করেছেন। জনসভায় লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার দলীয় নেতারা ছিলেন।
আরও পড়ুননাটোর–১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে রেললাইনে শুয়ে পড়লেন বঞ্চিত নেতার সমর্থকেরা০৫ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুননাটোর-১ আসনে বোন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, প্রতিবাদে ভাইয়ের সমর্থকদের বিক্ষোভ ০৪ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদায় গামিনি…
কালো প্যান্ট। গায়ে প্রিন্টের নীল শার্ট। পরিপাটি পোশাকে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার বিকেলে পায়চারি করছিলেন গামিনি ডি সিলভা। এমন পোশাকে তাকে মিরপুরে দেখা যায়নি কখনো। চিরচেনা হ্যাটও নেই মাথায়!
অচেনা সেই মানুষটিই আজ শেষবারের মতো হাঁটলেন মিরপুরের সবুজ গালিচায়। মিরপুরের ঘাস, উইকেট আর আউটফিল্ডে যার হাতের ছোঁয়া লেগে আছে দীর্ঘ দেড় দশক, সেই লঙ্কান কিউরেটর গামিনি আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে। সহকর্মী ও মাঠকর্মীরা তাকে মাঠেই নিজেদের আয়োজনে বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছেন। আর ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের অফিসে ডেকে সেরেছেন আনুষ্ঠানিকতা। দেওয়া হয়েছে ক্রেস্ট। বিদায়ের মুহূর্তে প্রত্যেকের উপহার ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গামিনি। সহকর্মী অনেকের চোখে-মুখে ছিল আবেগের ছাপ।
২০১০ সালের অক্টোবরে ২ বছরের জন্য বিসিবিতে যোগ দেন আম্পায়ার থেকে কিউরেটর হওয়া এই লঙ্কান। দফায় দফায় চুক্তির মেয়াদ বেড়ে দেড় দশক কাটিয়ে দেন। তার হাতেই ছিল মিরপুরের উইকেট তৈরির দায়িত্ব। তবে গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজে মানহীন পিচ বানিয়ে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। পাকিস্তানের অধিনায়ক ও কোচ প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন উইকেটের মান নিয়ে।
সেই সমালোচনা সহ্য করতে চায়নি বিসিবি। ফলে দীর্ঘ ১৫ বছরের দায়িত্ব শেষে গামিনিকে বদলি করে পাঠানো হয় রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে। মিরপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বখ্যাত পিচ কিউরেটর টনি হেমিংয়ের হাতে।
তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল গামিনিকে আর রাখা হবে না। চলতি বছরের জুলাইয়ে তার সঙ্গে নতুন করে এক বছরের চুক্তি করেছিল বিসিবি। তবে সেই চুক্তির ৯ মাস বাকি থাকতেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন গামিনি। শর্ত অনুযায়ী দুই মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে তাকে। ১০ নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় ফিরে যাবেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন