শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সহজ করতে গুগলের ৯ ফিচার
Published: 8th, November 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আসার পর শিক্ষার্থী পড়াশোনার ধরন অনেকটাই বদলে গেছে। বদলে গেছে শেখার ধরন। এখন বইয়ের চেয়ে মোবাইল–ট্যাবে শিক্ষার্থীদেরা পড়ার হার বাড়ছে। কারণ, তাদের হাতে এসেছে নতুন নতুন কিছু প্রযুক্তি।
এমন অবস্থায় গুগল জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের হাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তুলে দিতে তারা কাজ করছে। গুগল ভারতে শিক্ষার রূপান্তরের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত শিক্ষণ পদ্ধতিগুলোর একটি বিস্তৃত পরিসর ঘোষণা করেছে। এটি গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ভারতে প্রকাশ করা হয়েছে। এর কেতাবী নাম ‘এআই অ্যান্ড দ্য ফিউচার অফ লার্নিং’। এই পেপারে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আগামী এক বছর বিনা মূল্যে গুগলের সর্বাধুনিক এআই টুলগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুনজার্মানিতে সামার স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম, আইইএলটিএস ছাড়াই আবেদন৮ ঘণ্টা আগেগুগলের ভাষ্য, তাদের এআই-চালিত শেখার সরঞ্জামগুলো শুধু তাৎক্ষণিক উত্তর দেওয়ার জন্য নয় বরং শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। গুগল বলছে, এসব টুল মানুষের শেখার মনোবিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। সম্প্রতি গুগল তার তিনটি মূল টুল—জেমিনি, নেটাবুকএলএম এবং সার্চ (Gemini, NotebookLM And Search)-এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শেখার ৯টি কার্যকর উপায় প্রকাশ করেছে। নিচে গুগলের সেই নির্দেশনাগুলোর সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো—
১.
গাইডেড লার্নিং ধাপে ধাপে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে
জেমিনির গাইডেড লার্নিং বা দিকনির্দেশনাভিত্তিক বৈশিষ্ট্যটি শেখার সুবিধা দেয়। এখানে প্রশ্ন করলে সরাসরি উত্তর না দিয়ে টুলটি সমস্যাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে চিন্তা করতে শেখায়। তাৎক্ষণিক সমাধান প্রদানের পরিবর্তে, খোলামেলা প্রশ্ন উত্থাপন করে যা শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলকভাবে চিন্তা করতে এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে অর্থপূর্ণ আলোচনায় জড়িত হতে উৎসাহিত করে।
২. স্মার্ট প্রস্তুতি সরঞ্জামগুলো অধ্যয়ন উপযোগী উপকরণ তৈরি করে
শিক্ষার্থীরা এখন তাৎক্ষণিকভাবে ক্লাস উপকরণ, পাঠ্য অনুচ্ছেদ বা হাতে লেখা নোটের ছবি থেকে ফ্ল্যাশকার্ড, অধ্যয়ন নির্দেশিকা এবং ইন্টারেক্টিভ কুইজ তৈরি করতে পারে। এই কাস্টমাইজেবল প্রস্তুতির সরঞ্জামগুলো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মূল ধারণাগুলো পর্যালোচনা করতে শেখায়। বিদ্যমান বিষয়বস্তুগুলো অনুশীলনে রূপান্তরিত করে পরীক্ষার জন্য কার্যকরভাবে প্রস্তুত করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, মূল্য হারাতে বসেছে ১০ ডিগ্রি২৮ অক্টোবর ২০২৫৩. জেমিনি লাইভ ভয়েস-অ্যাক্টিভেটেড টিউটরিং সেবা
ভয়েস ও ক্যামেরা ব্যবহার। ফোনের ক্যামেরা দিয়ে জ্যামিতির সমস্যা বা কোনো চিত্র দেখিয়ে প্রশ্ন করলে এআই তাৎক্ষণিকভাবে কথার মাধ্যমে গাইড দেয়। এতে আর টাইপ করার ঝামেলা নেই। রিয়েল-টাইম কথোপকথন এই বৈশিষ্ট্যটি শিক্ষার্থীদের হ্যান্ডস-ফ্রি শেখার সহায়তার জন্য একই সঙ্গে ভয়েস এবং ক্যামেরা ব্যবহার করার সুযোগ দেয়। প্রজেক্ট অ্যাস্ট্রা গবেষণার ক্ষমতা দিয়ে তৈরির কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের ফোনগুলোকে গণিত চ্যালেঞ্জিং সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারে।
৪. অডিও এবং ভিডিও ওভারভিউ গবেষণাকে রূপান্তরিত করে
দীর্ঘ লেখা বা জটিল ডকুমেন্টের সারাংশ তৈরি করে দেয় এই বৈষ্টিট্য। কোনো ৩০ পাতার গবেষণাপত্র আপলোড করলে টুলটি সহজ ভাষায় অডিও বা ভিডিও সারাংশ তৈরি করে দেয়। এটি ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষাতেও এ সুবিধা মিলবে। অর্থাৎ নোটবুকএলএম জটিল গবেষণা নথিগুলোকে একাধিক ভারতীয় ভাষায় উপলব্ধ করে সারাংশে রূপান্তর করে। সাম্প্রতিক আপগ্রেডগুলোতে জেমিনির ইমেজ জেনারেশন মডেল দ্বারা চালিত বিভিন্ন অডিও ওভারভিউ ফরম্যাট এবং উন্নত ভিডিও ওভারভিউ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের তথ্য যাছাইয়ে একাধিক উপায় প্রদান করে।
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প ন তর ব যবহ র র জন য গ গল র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
একটা ছায়া এসে আমাকে জাগিয়ে তোলে
মিছিল শেষে ভালোবাসি
আমি তোমায় জুড়ে আছি
কোনো মিথ্যে দিনের ঘোরে
সন্ধ্যার গরাদ ছুঁলে
ক্ষুধার অবাধ যাতায়াতে...
বোধের বন্দর ছেড়ে জাহাজ ভাসছে বোকা জলে
গাঢ় সবুজ বনে, রক্ত মিছিল হাঁটে
এই মিছিলের টুকরো ক্ষোভে তোমার গলার স্বর
আবার বাজছে যে গান নতুন কোনো রাগে।
যেন মানুষ বালিয়াড়ি
শত যন্ত্রণা বিঁধে আড়াআড়ি
তুমি রোদ মাখো স্বপ্নের গায়ে
আমি অন্ধকারে পথ হাঁটি।
এই ক্ষীণ হাওয়া বিভল
এই কবজি ডোবানো ভুলে
কত মানুষ কেটে গেছে, কত মানুষ কেটে যায়।
কত দিন গোনা বাকি?
আমি তোমার মধ্যেই থাকি।
তুমি এসো মিছিল শেষে—শুধু বলতে ভালোবাসি।
দেখেছি দূরে বিভ্রমে দাঁড়িয়ে
গভীর এ শালবনে বাতাসের স্বরে
বিস্তারে অবাধে
চাঁদ ঝরছে ঘুঘুর ডাকে
নিজেকে একা করে চলে গেছি আরও দূরে
দেখেছি বিভ্রমে দাঁড়িয়ে নিজেকে
নিজের কাছেই একা হয়ে গেছি কত!
অন্তর্গত বিবাদ মৌন হয়ে গেলে, অভ্যেস গল্পকে দীর্ঘায়িত করে
যেন ঠাকুমার ঝুলি খুলে বের হয়ে আসা পথ
পাশেই মুড়িয়ে যাচ্ছে নটেগাছ
যদি এক দিনের জন্য আমাকে আয়ত্ত করো
মনে কোরো না, আমার ক্ষত সেরে গেছে;
যে দাগগুলি দেখেছ, তার চেয়ে অনেক গভীরে
আমি শিকড় লুকিয়ে রাখি।
তারা পতনের সাথে তোমাকে বহন করে
আমাকে নিয়ে ডুবে যেতে চায়
কুসংস্কারের সূর্যে।
কিছু হাওয়া লীন, গীতল ধানে খেলে
সমীচীন পথ ধরে বক্ষ চিড়ে গেলে চলে
কেন এমন দোটানা দিনে
বিষাদ ঝরে—
গাইয়ের ওলান চুঁয়ে?
রাখালের বাঁশি কবেই গেছে মুছে
বনের ভেতর মন নিঃসঙ্গ দিন গুনে
নাম ভুল করে হাত ধরা ডিজিটালে
টলোমলো জল, আধোনীল ফোন
ডুবে গেছে সব নাগরিক ফেসবুকে!
আমি হাতড়াই কিছু আলুথালু মেঘ
থকথকে নদী, বিভেদের রেশ
সব আছে তাই, কিছুই না পাই
ঝমঝমে বৃষ্টির প্রেমে নাম জপে
যা হারাই, কী করে ফেরাই?
সারল্য মুছে—
জীবন যে গেছে সাপিনীর মতো বেঁকে!
তুমি ছিলে না—
তবু জানালার পর্দায়
বাতাস হয়ে দুলছিল
তোমার ফেলে যাওয়া নিশ্বাস।
ব্যতিব্যস্ত দুপুরে
বিছানায়
গড়াগড়ি খাচ্ছিল
এলিয়ে পড়া রোদের মতো
তোমার না থাকা।
আমি জানি, তুমি ছিলে না—
তবু দরজার গায়ে হঠাৎ এক ঝলক তোমার
যেমন কবিতার মধ্যে হঠাৎ ঢুকে পড়ে একটা–দুটো ভুল শব্দ—
যাকে আর তুলে নেয়া যায় না।
তুমি চলে গেলে—
তোমার গলার আওয়াজ পড়ে রইল
আমার থালাবাসনের ফাঁকে ফাঁকে
নিভু স্বরে।
আমার চায়ের কাপ—
অর্ধেক নিঃসঙ্গতা নিয়ে ঢুকে পড়ল
লোকালয়ের কোলাহলে।
মানুষের দুর্দশার স্মৃতি বালিশে নিয়ে
প্রতি রাতে আমি ঘুমাতে যাই
তোমার নামটা
জিহ্বার নিচে রেখে।
আর রোজ ভোরে একটা ছায়া
এসে আমাকে জাগিয়ে তোলে
এখানে পৃথিবীর সারৎসারে।
যে বেদনা তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে নত হয়ে তুমি গাছ হবার কথা ভাবো। যে আঘাত তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে নত হয়ে তুমি নদী হবার কথা ভাবো। যে ক্ষত তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে বিদূর হয়ে তুমি পাখি হবার কথা ভাবো। যে কপর্দকশূন্যতা মানুষ তোমারে দিতে পারে, তার কাছে নিচু হয়ে তুমি অন্য জীবনের কথা ভাবো।
আর এক জীবন পরে তুমি দেখো, উদ্যানে ঝুঁকে আছে নিরাভরণ পাতাদের শুষ্ক, মর্মর দেহ। নদীর বুকে কাঁপছে অজস্র দস্যু নৌকা। তীরে জনপদের বারোয়ারি যাপন।