কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের পর ৪৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
Published: 8th, November 2025 GMT
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঝটিকা মিছিলের পর ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার তাঁদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তায় বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাসহ (ডিবি) থানা-পুলিশের সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। শনিবার দুপুরে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
গতকাল বেলা দেড়টার দিকে বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝটিকা মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিকেলে ঝটিকা মিছিলের ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে ওই ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যায়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পাপন লাল, বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর নুর তুষার, কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শের এ আলম, দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার বুড়িচংয়ের কালাকচুয়া এলাকায় বেলা ১টা ৩০ মিনিট থেকে ৩১ মিনিট পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল হয়। ওই ঘটনার পরপরই জেলা ডিবি ও থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্তদের আটক করেছে।
গ্রেপ্তার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিদেশে পলাতক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ কিছু নেতা গোপনে অর্থ পাঠিয়ে সরকারবিরোধী কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন। তাঁদের অর্থায়নেই কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে এনে স্বল্প সময়ের ঝটিকা মিছিল করা হয়। মিছিলের বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারী মুখ ঢেকে রেখেছিলেন, যাতে তাঁদের পরিচয় গোপন থাকে। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা ডিবির ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তায় বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়ার চেষ্টা করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, রশিদ আহমেদ হোসাইনী প্রমুখ। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রুইফেং ঝাং ও অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।
উভয় পক্ষের আলোচনায় পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য বৈচিত্র্যকরণের কৌশল গুরুত্ব পায়। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কমানো ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য করণীয় বিষয়েও আলোচনা হয়।
আইএমএফের প্রতিনিধিদের কাছে জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজিএমইএর নেতারা। তাঁরা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাকশিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে কৃত্রিম তন্তু ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, তাঁদের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কসুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ), যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।