লাইনচ্যুত বগি রেখে চলে গেল ট্রেন, ১১ ঘণ্টা পর উদ্ধার
Published: 8th, November 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ঢাকামুখী লেনে একটি লাইনচ্যুত বগিসহ মোট তিনটি বগি রেখে চলে গেছে একটি মালবাহী ট্রেন। এই দুর্ঘটনার ১১ ঘণ্টা পর বগি তিনটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার উত্তরে শেখপাড়া এলাকায়। এতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে জানায় রেলওয়ে সূত্র।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লাইনচ্যুত হওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত বগিটিকে অন্তত ১০০ মিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। ফলে বগিটি ছাড়াও রেলের স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেলসূত্র জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে আজ শনিবার সকালে উদ্ধারকাজ শুরু করে উদ্ধারকারীরা। এরপর ঘটনার ১১ ঘণ্টা পর বেলা দুইটার দিকে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে চলাচলকারী ট্রেনগুলো ডাউন লাইন (চট্টগ্রামমুখী লেন) দিয়ে চলাচল করেছে। এতে গন্তব্যে কিছুটা দেরিতে পৌঁছেছে ট্রেনগুলো। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি বগিতে গার্মেন্টস পণ্য ও জুতা রয়েছে।
রেল পুলিশের সীতাকুণ্ড ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ ছিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রেন সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে শেখপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ফলে দুর্ঘটনাকবলিত বগিটির একপাশের চাকা রেললাইনের বাইরে অপর পাশের চাকা দুই রেললাইনের মাঝে ছিল। এতে সামনের দিকের আরও দুটি বগি আটকা পড়ে। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি বগি রেখে ট্রেনটি পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে। আজ বেলা দুইটার দিকে লাইনচ্যুত বগিটি রেললাইনের ওপরে তুলতে সক্ষম হয়।
রেলওয়ে পূর্বঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেনটির একটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর অন্তত ১০০ মিটার টেনে নিয়ে যায় ইঞ্জিন। ফলে রেলের চাকার সঙ্গে সিমেন্টের স্লিপার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বগিটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এসে বগিটি উদ্ধার করে লাইনের ওপর তোলেন। যে সব স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোকে তুলে তাৎক্ষণিক কাঠের স্লিপার দিয়ে রেললাইন সচল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
দুর্ঘটনায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা যাচাই করা হচ্ছে বলে জানান রেলওয়ের প্রকৌশলী আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বগিটিকে ওয়ার্কশপে নেওয়া হবে। ঢাকামুখী রেললাইন ঠিক করার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। এরপর ওই পথ দিয়ে ট্রেন চালানো হবে। ততক্ষণ সময় পর্যন্ত চট্টগ্রামমুখী লাইন দিয়ে উভয় দিকে রেল চলাচল করবে। এতে যাত্রাপথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর কিছুটা সময় বিলম্ব হচ্ছে। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ নেই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ত ত নট উদ ধ র ল ইন র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
মিস মেক্সিকোকে কটাক্ষ, বেরিয়ে গেলেন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগীরা
আগামী ২১ নভেম্বর থাইল্যান্ডে বসতে যাচ্ছে মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসর। তার আগে বিতর্কে জড়িয়েছে প্রতিযোগিতাটি। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ব্যাংককে আয়োজিত প্রি-পেজেন্ট অনুষ্ঠানে এক প্রতিযোগীকে ‘ডামি’ বলে মন্তব্য করেন থাই বিচারক নাওয়াত ইতসারাগ্রিসিল। এরপর মেক্সিকোর ওই প্রতিনিধি ফাতিমা বোসসহ কয়েকজন প্রতিযোগী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
প্রি-পেজেন্ট অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে লাইভ চলছিল। এ ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরী প্রতিযোগীরা নাওয়াত ইতসারাগ্রিসিলের সামনে সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে তিনি বলেন, “সব প্রতিযোগীকে আয়োজক দেশের প্রচার করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে জিতু কমল
‘ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ’ নিয়ে ফিরছেন তাহসান
সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করে নাওয়াত বলেন, “সাবধান থাকবেন, আপনারা এখন থাইল্যান্ডে আছেন। আপনারা একটি খেলার মধ্যে আছেন।” এরপর মিস মেক্সিকো ফাতিমা বোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার ভাষ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের উদ্দেশ্যে আয়োজিত একটি ফটোশুটে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ফাতিমা। মেক্সিকোর পেজেন্ট পরিচালক তাকে কোনো কিছু পোস্ট না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মেক্সিকোর প্রতিযোগী ফাতিমা দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নাওয়াত তাকে বাধা দিয়ে বলেন, “সে (ফাতিমা) যেন মৌখিকভাবে নিশ্চিত করেন যে, থাইল্যান্ড সম্পর্কে পোস্ট দিতে রাজি।”
এরপর অন্য এক প্রতিযোগী প্রশ্নটি আবার বলার অনুরোধ করেন। কিন্তু তা বলতে অস্বীকৃতি জানান। নাওয়াত বলেন, “আমি শুধু মিস মেক্সিকোকেই প্রশ্নটি করেছি। কারণ তার কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি।” ফাতিমা এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও নাওয়াত আবারো একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “ফাতিমা তার দেশের পেজেন্ট পরিচালকের নির্দেশে কাজ করছেন এবং সে একজন ‘ডামি’ (পুতুল)।”
নাওয়াত যখন এভাবে কথা বলে যাচ্ছেন তখনো দাঁড়িয়ে ফাতিমা। ফলে নাওয়াত জানতে চান সে কেন এখনো দাঁড়িয়ে আছেন। জবাবে ফাতিমা বলেন, “কারণ আমারও একটি কণ্ঠ আছে। আপনি আমাকে একজন নারী হিসেবে সম্মান দিচ্ছেন না।”
এরপর নাওয়াত নিরাপত্তা কর্মীদের ডেকে পাঠান। এসময় অন্যান্য প্রতিযোগীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ফাতিমা অডিটোরিয়াম ত্যাগ করার সময়ে বলেন, “নারী হিসেবে আমাদের প্রতি আপনাদের সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। আমি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, এটি আমার দোষ নয়। আপনারা আমার সংগঠনের সঙ্গে সমস্যা করছেন।” তারপর অন্য প্রতিযোগীরাও ফাতিমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ান। তখন নাওয়াত বলেন, “যারা প্রতিযোগিতা চালিয়ে যেতে চান, তারা বসেন।” এতে মেয়েরা বিভ্রান্ত হয়ে পরস্পরের দিকে তাকাতে থাকেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফাতিমা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম পিপল। কিন্তু তারা কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঘটনার পরের দিন আয়োজক কর্তৃপক্ষ ইনস্টাগ্রামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, “আমরা সমস্ত অংশগ্রহণকারী, কর্মী এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান, নিরাপত্তা ও সততা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এমজিআই) এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মি. মারিও বুকারোর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন। এই আয়োজনের লক্ষ্য, সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো, সকল প্রতিনিধির জন্য নিরাপদ ও পেশাদার পরিবেশ নিশ্চিত করা।”
ঢাকা/শান্ত