কথায় কথায় রাস্তায় যাবেন, বৃহত্তর দল যদি নামে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু
Published: 8th, November 2025 GMT
বাংলাদেশের মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না, স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে তবে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি আবার তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায় তাহলে কি হবে সংঘর্ষ হবে না? বৃহত্তর দল বাংলাদেশে যদি রাস্তায় নামে এগুলোর প্রতিবাদে, আমাদের সংঘর্ষ হবে। এইজন্য আমরা কি শেখ হাসিনা বিদায় করেছি?’
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ট্রেস কনসালটেন্সি নামে এক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলগুলো ‘অবসেসড’ হয়ে গেছে বলেন আমীর খসরু। কিছু কিছু রাজনীতিবিদদের মধ্যে এ ধরনের মনমানসিকতা ডেভেলপ করে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে যে যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে তার বাইরে গিয়ে আবার নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে কিন্তু ঐকমত্যের শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য হতে হবে।’
প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রাজধানীর একটি হোটেলে আজ শনিবার।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কমিশনে কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না, ৩১ দফা বাস্তবায়ন হবে: আমীর খসরু
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে কী সিদ্ধান্ত হলো, সেটি দেখার বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
কারও নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘৩১ দফার মধ্যে সংস্কারের সম্পূর্ণ একটা রূপরেখা আছে। তো তারা সংস্কার চাক, আর না চাক। বলুক, আর না বলুক। আমরা সবাই মিলে যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিলাম, আমরা কিন্তু আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। ওই কমিশন কী বলে, ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো, এটাতে আমাদের কিছু আসে যায় না।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বাংলাদেশের সংবিধান ও সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণফোরাম। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি কামাল হোসেন। তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, অন্য কারও (রাজনৈতিক দল) যদি কিছু থাকে, তারাও জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারে।...ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসেন। সংসদে আপনি পরিবর্তন করেন, এটাই তো নিয়ম। কিন্তু আপনি জোর করে ঢাকা শহরে বসে, আপনার দাবি মানতে হবে, এটার জন্য আবার ঐকমত্য কমিশনকে ব্যবহার করবেন, অথবা সরকারের ব্লেসিং (আশীর্বাদ) নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এটার জন্য তো বাংলাদেশের মানুষ এত ত্যাগস্বীকার করেনি।
উল্লেখ্য, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি দলরে পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর মৎস্য ভবন মোড়ে এক ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ১১ নভেম্বরের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব দাবি মেনে নিতে সময় বেঁধে দেন। তা না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গণভোট বর্তমান সংবিধানের পরিপন্থী উল্লেখ করে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘এই সংবিধানে গণভোটের কোনো প্রভিশন (অনুমতি/বিধান) নেই, ক্লিয়ারলি (পরিষ্কার)। আপনার যদি গণভোট করতে হয়, তাহলে এই সংবিধান পরিবর্তন করে গণভোটের প্রভিশন আগে আনতে হবে। তাহলে এই পরিবর্তনটা আপনাকে কোথায় করতে হবে? সংসদে করতে হবে এবং সংসদ হচ্ছে জনগণের রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি)।’
গণভোটের ব্যাপারে বিএনপি উদারতা দেখানো ঠিক হয়নি বলে জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশে সহনশীলতা ও রাজনৈতিক ঐক্যের প্রেক্ষাপটে এই গণভোটের পক্ষে মত দিয়েছে, তা–ও নির্বাচনের দিন। কিন্তু আসলে নির্বাচনের দিনও তো গণভোট হতে পারে না। এটা তো বিএনপির উদারতা এবং এই উদারতাটা দেখানো বিএনপির ঠিক হয়নি। কারণ, এটা সাংবিধানিকভাবে কারেক্ট (সঠিক) না। এটা নৈতিকভাবে কারেক্ট না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে কারেক্ট না যে উদাহরণটা দেখিয়েছে, এটার জন্য আজকে আমরা সমস্যা ফেস করতেছি।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নারী পক্ষের সভাপতি শিরীন হক প্রমুখ।