আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ১৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে দাবি-আপত্তি চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

শনিবার (৮ নভেম্বর) প্রকাশিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে কেউ চাইলে এই সংস্থাগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে আপত্তি বা অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

আরো পড়ুন:

১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে নির্বাচন করা কঠিন: আসিফ

উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল

ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো.

আশাদুল হক জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত আপত্তি জমা দিতে হবে। আপত্তির সঙ্গে অবশ্যই প্রমাণাদি এবং আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে ছয় কপি (সেট) দাখিল করতে হবে।

আপত্তি গ্রহণের পর শুনানি শেষে ইসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, যা কমিশনের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। গণবিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচিত ১৬ সংস্থা হলো:
১. এসো জাতি গড়ি (এজাগ)
২. নেত্রকোনা সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এনএসডিও)
৩. ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডরপ)
৪. হেল্প সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন
৫. কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি
৬. দীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (ডিএমইউএস)
৭. রুরাল ইকোনমিক সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রেসডো)
৮. রাসটিক
৯. বাঁচতে শেখা
১০. পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা)
১১. ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন
১২. মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মউক)
১৩. বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান)
১৪. যুব একাডেমি
১৫. শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এসডিএস)
১৬. উইমেন এন্টারপ্রিনিয়র অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন স্থানীয় ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেয়। তবে, প্রাথমিক যাচাইয়ের পর আপত্তি ওঠায় সাতটি সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, নতুন ১৬ সংস্থার বিষয়ে জনমত ও আপত্তি যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস ড ভ লপম ন ট আপত ত

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, নৈতিক: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, বরং নৈতিক। যাতে প্রতিষ্ঠান ক্ষমতাকে নয়, মানুষকে সেবা দেয়, কর্তৃত্ব বৈধতার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিচার বিভাগ জনগণের আস্থার নৈতিক অভিভাবকে পরিণত হয়।”

শনিবার (৮ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি (হীরক জয়ন্তী) ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

‘জামায়াতের রাজনীতি শুরু হয় জিয়াউর রহমানের নীতির কারণে’

ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘প্রথম’ ঢাবিতে ‘লিটল ফ্রি লাইব্রেরি’

প্রধান বিচারপতির মা ড. সুফিয়া আহমেদ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন।

মায়ের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “তিনি ছিলেন সেই বিরল প্রজন্মের একজন, যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নৈতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। তার জীবন ছিল নারীর একাডেমিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার নৈতিক শুদ্ধতার প্রতীক, যা এখনো আমাকে প্রভাবিত করে।”

তিনি বলেন, “এই ঐতিহাসিক দিনে আপনাদের সামনে দাঁড়ানো মানে স্মৃতি ও নিয়তির এক মহামিলনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছরের যাত্রা কেবল একাডেমিক সাফল্যের ইতিহাস নয়, বরং এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।”

তিনি আরো বলেন, “আইন হলো কোনো জাতির নৈতিক ইতিহাস, যা ন্যায়ের ভাষায় লেখা হয়; আর ইতিহাস হলো কেন সমাজকে আরো ভালো হতে হবে, তারই অনুসন্ধান। ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না, আর কোনো বিচারক তার সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।”

প্রধান বিচারপতি সম্প্রতি মিসরের বিবলিওথেকা আলেকজান্দ্রিনা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “প্রাচীন আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার মানবজাতির সেই সাহসী বিশ্বাসের প্রতীক ছিল, যেখানে জ্ঞানের মাধ্যমে ভিন্ন সভ্যতার মানুষ একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও একইভাবে রাজনৈতিক প্রতিকূলতা ও ইতিহাসের বিভাজন অতিক্রম করে জ্ঞানের আলোয় জাতিকে আলোকিত করে চলেছে।”

বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না। এটিকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়। আর সময়ের সঙ্গে বিচার বিভাগকে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে তাকে সংস্কার করতে হয়। গত ১৫ মাসে আমরা বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি এবং সেটি এখনো চলমান আছে।”

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ