ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলা সদরের উত্তর কুট্টাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

দুই শিশু হলো উত্তর কুট্টাপাড়া গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে তাকরিম হোসেন (২ বছর ৬ মাস) ও তাঁর ভাগনে আদনান (৫)। আদনান উপজেলা সদরের উচালিয়াপাড়া গ্রামের প্রবাসী আরাফাত হোসেনের ছেলে। আদনান দুই দিন আগে মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুই শিশু আজ সকাল ৯টার দিকে বাড়ির পাশে খেলছিল। এ সময় তারা পাশের একটি পুকুরের পানিতে ডুবে যায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা পুকুরপাড়ের কাছে তাকরিমের লাশ ভাসতে দেখেন। তার লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুকুর থেকে আদনানের লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

আক্তার হোসেনের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দীন বলেন, ‘দুই শিশু খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে লাশ দুটি দাফনের ব্যবস্থা করেছি।’

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটি পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আদন ন

এছাড়াও পড়ুন:

একটা ছায়া এসে আমাকে জাগিয়ে তোলে

মিছিল শেষে ভালোবাসি

আমি তোমায় জুড়ে আছি
           কোনো মিথ্যে দিনের ঘোরে
সন্ধ্যার গরাদ ছুঁলে
           ক্ষুধার অবাধ যাতায়াতে...

বোধের বন্দর ছেড়ে জাহাজ ভাসছে বোকা জলে
গাঢ় সবুজ বনে, রক্ত মিছিল হাঁটে
এই মিছিলের টুকরো ক্ষোভে তোমার গলার স্বর
আবার বাজছে যে গান নতুন কোনো রাগে।

যেন মানুষ বালিয়াড়ি
           শত যন্ত্রণা বিঁধে আড়াআড়ি
তুমি রোদ মাখো স্বপ্নের গায়ে
আমি অন্ধকারে পথ হাঁটি।

এই ক্ষীণ হাওয়া বিভল
           এই কবজি ডোবানো ভুলে
কত মানুষ কেটে গেছে, কত মানুষ কেটে যায়।

কত দিন গোনা বাকি?
আমি তোমার মধ্যেই থাকি।
তুমি এসো মিছিল শেষে—শুধু বলতে ভালোবাসি।

বিভ্রম

দেখেছি দূরে বিভ্রমে দাঁড়িয়ে
গভীর এ শালবনে বাতাসের স্বরে
বিস্তারে অবাধে
চাঁদ ঝরছে ঘুঘুর ডাকে
নিজেকে একা করে চলে গেছি আরও দূরে
দেখেছি বিভ্রমে দাঁড়িয়ে নিজেকে
নিজের কাছেই একা হয়ে গেছি কত!

স্বীকারোক্তি

অন্তর্গত বিবাদ মৌন হয়ে গেলে, অভ্যেস গল্পকে দীর্ঘায়িত করে
যেন ঠাকুমার ঝুলি খুলে বের হয়ে আসা পথ
পাশেই মুড়িয়ে যাচ্ছে নটেগাছ

যদি এক দিনের জন্য আমাকে আয়ত্ত করো
মনে কোরো না, আমার ক্ষত সেরে গেছে;
যে দাগগুলি দেখেছ, তার চেয়ে অনেক গভীরে
আমি শিকড় লুকিয়ে রাখি।

তারা পতনের সাথে তোমাকে বহন করে
আমাকে নিয়ে ডুবে যেতে চায়
কুসংস্কারের সূর্যে।

সমীকরণ

কিছু হাওয়া লীন, গীতল ধানে খেলে
সমীচীন পথ ধরে বক্ষ চিড়ে গেলে চলে
           কেন এমন দোটানা দিনে
বিষাদ ঝরে—
           গাইয়ের ওলান চুঁয়ে?

           রাখালের বাঁশি কবেই গেছে মুছে
বনের ভেতর মন নিঃসঙ্গ দিন গুনে
           নাম ভুল করে হাত ধরা ডিজিটালে
টলোমলো জল, আধোনীল ফোন
ডুবে গেছে সব নাগরিক ফেসবুকে!

আমি হাতড়াই কিছু আলুথালু মেঘ
থকথকে নদী, বিভেদের রেশ
সব আছে তাই, কিছুই না পাই

ঝমঝমে বৃষ্টির প্রেমে নাম জপে
যা হারাই, কী করে ফেরাই?
সারল্য মুছে—
জীবন যে গেছে সাপিনীর মতো বেঁকে!

তুমি ছিলে না, ছায়া ছিল ঘরে

তুমি ছিলে না—
তবু জানালার পর্দায়
বাতাস হয়ে দুলছিল
তোমার ফেলে যাওয়া নিশ্বাস।

ব্যতিব্যস্ত দুপুরে
বিছানায়
গড়াগড়ি খাচ্ছিল
এলিয়ে পড়া রোদের মতো
তোমার না থাকা।

আমি জানি, তুমি ছিলে না—
তবু দরজার গায়ে হঠাৎ এক ঝলক তোমার
যেমন কবিতার মধ্যে হঠাৎ ঢুকে পড়ে একটা–দুটো ভুল শব্দ—
যাকে আর তুলে নেয়া যায় না।

তুমি চলে গেলে—
তোমার গলার আওয়াজ পড়ে রইল
আমার থালাবাসনের ফাঁকে ফাঁকে
নিভু স্বরে।

আমার চায়ের কাপ—
অর্ধেক নিঃসঙ্গতা নিয়ে ঢুকে পড়ল
লোকালয়ের কোলাহলে।

মানুষের দুর্দশার স্মৃতি বালিশে নিয়ে
প্রতি রাতে আমি ঘুমাতে যাই
তোমার নামটা
জিহ্বার নিচে রেখে।

আর রোজ ভোরে একটা ছায়া
এসে আমাকে জাগিয়ে তোলে
এখানে পৃথিবীর সারৎসারে।

বিষাদাগার

যে বেদনা তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে নত হয়ে তুমি গাছ হবার কথা ভাবো। যে আঘাত তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে নত হয়ে তুমি নদী হবার কথা ভাবো। যে ক্ষত তোমারে মানুষ দিতে পারে, তার কাছে বিদূর হয়ে তুমি পাখি হবার কথা ভাবো। যে কপর্দকশূন্যতা মানুষ তোমারে দিতে পারে, তার কাছে নিচু হয়ে তুমি অন্য জীবনের কথা ভাবো।

আর এক জীবন পরে তুমি দেখো, উদ্যানে ঝুঁকে আছে নিরাভরণ পাতাদের শুষ্ক, মর্মর দেহ। নদীর বুকে কাঁপছে অজস্র দস্যু নৌকা। তীরে জনপদের বারোয়ারি যাপন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ